শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

ইসলাম প্রচারে আউলিয়া কিরামদের ভূমিকা অনন্য

আবদুর রশিদ

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে আত্মনিবেদিত পীর ও আউলিয়ায়ে কিরাম ইসলাম প্রচারকে তাদের মূল লক্ষ্যরূপে নির্ধারণ করেন। তারা ওয়াজ-নসিহত, তালিম-তালকিন এবং জাহেরি-বাতেনি পন্থায় ইসলাম প্রচার করেন। মানব সেবার মাধ্যমে আউলিয়ায়ে কিরাম মানুষের মনে ঠাঁই করে নেন। তারা ইসলামের অমূল্য বাণী সংবলিত বই-পুস্তক রচনা করেন। উপযুক্ত খলিফা ও প্রতিনিধি তৈরি করে তাদের মাধ্যমে দূর-দূরান্তে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেন। আউলিয়ায়ে কিরাম প্রিয়নবী (সা.)-এর যোগ্য ওয়ারিশ ও উত্তরাধিকার। প্রিয়নবী (সা.)-এর ইলম ও জ্ঞানের তারা ধারক-বাহক। ফলে তাঁর আনীত ইসলামের প্রচারে তাদের নিরলস চেষ্টা ও সাধনা সর্বজনস্বীকৃত। আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর জীবন ইতিহাস পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, ইসলাম প্রচারে তার সাধনা কত বেশি বিস্তৃত ছিল। তিনি নিজে জাহেরি ও বাতেনি ইলমের সমুদ্র ছিলেন। তিনি বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসায় অধ্যাপনা করেছেন, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি খানকাকেন্দ্রিক তালিম-তালবিয়াতের মাধ্যমে ইসলামের প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছেন। আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) ইসলামের সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট্য ও তত্ত্ব প্রচারে বহু বই-পুস্তক রচনা করেছেন। হজরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.) শুধু ইমান-ইসলামের প্রচারের স্বার্থেই তার জন্মস্থান ত্যাগ করে আজমিরে এসে বসবাস করেছেন। রাজা পৃথ্বীরাজের প্রবল প্রতাপকে ধূলিসাৎ করে তিনি লাখ লাখ অমুসলিমকে ইসলামের ছায়াতলে নিয়ে আসেন। তার দরবার ও খানকাকে কেন্দ্র করে তার তালিম ও তালকিনকে অনুসরণ করে এখনো ইসলামের প্রচার ঘটছে। সিলেট হজরত শাহজালাল ইয়েমেনি, চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামি, রাজশাহীতে শাহ মখদুমসহ আউলিয়ায়ে কিরামের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। চলমান সময়ে যখন নানারকম বাড়াবাড়ি, সীমালঙ্ঘন ও উগ্রপন্থা ইসলাম ও মুসলমানদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে কালিমা লেপন করছে তখন পীর, মুরশিদ ও ওলি-আউলিয়া ইসলামের শান্তির বাণী, মানবতার বাণী, অহিংস-অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা প্রচার করে যাচ্ছেন অবিরাম অবিরত। তাদের এ আহ্বান, প্রচার-সাধনা চলমান থাকুক অনন্তকাল। আমিন।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর