শনিবার, ৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

রপ্তানি আয় বাড়ছে

তলানি থেকে উঠে আসার আশা

গত মে মাসে দেশের রপ্তানি আয় আগের মাসের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে কোনো দেশের রপ্তানি আয় তিনগুণ বৃদ্ধি দৃশ্যত মহাসাফল্যের ঘটনা। তবে এমন সাফল্যেও এ মুহূর্তে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ করোনা নামের অভিশাপে এপ্রিল মাসে দেশের রপ্তানি আয় তলানিতে নেমেছিল। মহাবিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। মে মাসে এপ্রিলের চেয়ে তিনগুণ বেশি রপ্তানি আয় বাড়লেও এ পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬২ শতাংশ কম। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় সে ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে সে ক্ষেত্রে গত বছরের চেয়ে মে মাসে ৬২ শতাংশ কম আয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। তবে গহ্বরের তলানি থেকে উপরে ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া হতাশার মধ্যেও স্বস্তিদায়ক ঘটনা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন ইউরোপ আমেরিকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল, সেই সময় গত এপ্রিলে ভয়াবহ ধস নামে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এ অন্যতম খাতটিতে। একক মাস হিসেবে গেল এপ্রিলে প্রায় ৮৩ শতাংশ পণ্য রপ্তানি আয় কমে যায়। সর্বসাকুল্যে ৫২ কোটি মার্কিন ডলারের আয় আসে ওই মাসে। এক মাসে এত কম হারে রপ্তানি বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো দেখা যায়নি। মার্চ থেকে লকডাউন ও পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় গত এপ্রিলে ব্যাপকভাবে রপ্তানি আয় কমে যায়। তবে এপ্রিল থেকে গার্মেন্ট কারখানাগুলোতে আবার কাজ শুরু হয়, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে রপ্তানি আয়ে। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই করোনা সংকটেও আগের বছরের তুলনায় দেশের প্রকৌশলী পণ্য (২৭ শতাংশ), হিমায়িত মাছ (২২ শতাংশ), সবজি (৬১ শতাংশ), ফলমূল (৫৩ শতাংশ), চা (১০ শতাংশ), তামাক (২৪ শতাংশ), কাঁচাপাট (১৬ শতাংশ), পাটের ব্যাগ (২৩ শতাংশ), জুট ইয়ার্ন (৮ শতাংশ), গ্লাস অ্যান্ড গ্লাসওয়্যার (১৬৯ শতাংশ) ফার্নিচার ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারিং পণ্যে রপ্তানি আয় প্রায় ৩১ শতাংশ বেড়েছে। তবে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকে প্রবৃদ্ধির নেতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। তৈরি পোশাক যেহেতু দেশের রপ্তানির প্রধান খাত এবং ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত, সেহেতু এ খাত যাতে দুর্দিন কাটিয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে হতে হবে উদ্যোগী। দেশের অর্থনীতির স্বার্থেই পোশাক খাতের পুনরুজ্জীবনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর