শনিবার, ৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মাদক পাচারের ঢল

সততার সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

করোনায় সারা দুনিয়ার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। ইতিহাসে আর কখনো এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি মানুষ। জ্ঞান-বিজ্ঞানে মানুষ যখন ঈর্ষণীয় অবস্থানে বলে ভাবা হয়, তখন করোনা নামের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসের কাছে মানুষের অসহায়ত্ব অপ্রত্যাশিত শুধু নয়, দুর্ভাগ্যজনকও বটে। দুনিয়ার ৭০০ কোটি মানুষের এ বিপদের দিনেও পরমানন্দে নিজেদের মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মানুষবেশী একদল পিশাচ। তারা করোনাকালে বাড়িয়েছে তাদের তৎপরতা। বাংলাদেশেও এখন চলছে মাদক কারবারিদের সুদিন। করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে পাচার হচ্ছে এ মরণনেশা। এসব চালানের হোতাদের পরিচয় গোপন রাখতে মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছে বিশেষ সংকেত ও কোড। যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করছে অন্যজনের আইডি দিয়ে নেওয়া মোবাইল সিম। এতে করে চালানের হোতাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া মনোভাবের তথ্য পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রাম পুলিশ প্রশাসন। জোরদার করেছে তৎপরতা। করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে প্রশাসনের শিথিলতার সুযোগে বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ইয়াবা যাচ্ছে কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তারা নিত্যনতুন কৌশলে কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে ইয়াবার চালান। ইয়াবা মাফিয়ারা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবহার করছে কিছু সংকেত ও কোড। তারা চালানের সঙ্গে একটি বিশেষ সংকেত ও কোড বলে দেয় বাহককে। একই সঙ্গে দেওয়া হয় একটি মোবাইল নম্বর। বাহক নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে ইয়াবা মাফিয়াদের দেওয়া নম্বরে ফোন করে কোড কিংবা সংকেত মিলিয়ে হস্তান্তর করে ইয়াবার চালান। মাদক পাচারের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের আমলে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান জারি করা সত্ত্বেও এই পাপ ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না ভূত তাড়ানোর জন্য যে সরিষার প্রয়োজন, তার মধ্যে ভূত থাকার কারণে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং জনপ্রতিনিধিরা সততার সংকটে না ভুগলে ইয়াবাসহ সব মাদক ব্যবসার টুঁটি চেপে ধরা সহজেই সম্ভব। আমরা আশা করব সংশ্লিষ্টদের সততার সংকট থেকে বেরিয়ে আনতে সরকার সম্ভাব্য সব কিছু করবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর