রবিবার, ৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে ছাঁটাইয়ের পাঁয়তারা

মালিকদের সাইলকসুলভ আচরণ

পোশাক শিল্পে ব্যাপকহারে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে মালিক পক্ষ। নব্য সাইলকরা সরকারের কাছ থেকে বিপুল অর্থ প্রণোদনা হিসেবে নিয়ে এখন নিজেদের আসল চেহারায় আত্মপ্রকাশ করতে চাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে পোশাক শিল্পের জন্য আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল মালিক পক্ষ করোনাকালে শ্রমিকবান্ধব ভূমিকা পালন করবেন এই আশায়। কিন্তু পয়সা হজম ও খেল খতম তত্ত্বে মেতে উঠেছেন মালিকরা। বিজিএমইএ সভাপতি ইতিমধ্যে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আভাস দিয়েছেন। বলেছেন, কারখানা বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি কাজের ঘাটতি ও উৎপাদন সক্ষমতা পূর্ণভাবে ব্যবহার করতে না পারায় উদ্যোক্তারা টিকে থাকার লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন, এটাই বাস্তবতা। পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ নেতার দাবি, কারখানায় ৫৫ শতাংশ কাজ কমেছে। কোনো কারখানাই সামর্থ্যরে শতভাগ ব্যবহার করতে পারছে না। ৩৫ শতাংশ সক্ষমতায় কারখানা সচলের ঘটনাও আছে। বড় কারখানাগুলোও ৬০ শতাংশের বেশি সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। গত মার্চ থেকে এ পর্যন্ত পোশাক শিল্পে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও অধিক ক্রয়াদেশ বাতিল হয়েছে। পোশাক শিল্পের আন্তর্জাতিক বাজার করোনার প্রভাবে সংকুচিত হয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মধ্যে থেকেও প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় উদ্যোক্তারা শ্রমিকদের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের মজুরি পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণ করেছেন। মার্চ মাসে কারখানাগুলো এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে ছিল যে, শুধু ১৫ দিন কাজ হয়েছে। এপ্রিলে ২৫ দিন কাজের জন্য শ্রমিকদের পুরো মজুরি দেওয়া হয়েছে, যারা কাজ করেননি তাদের ৬৫ শতাংশ মজুরি পরিশোধ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পোশাক শিল্পে করোনাভাইরাসের জন্য কাজ করেনি এমন শ্রমিকদের ৫৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। পোশাক শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে তারা বিশেষ সহায়তা চেয়েছেন। শ্রমিক নেতাদের দাবি মালিকপক্ষ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের হুমকি দিয়ে এটিকে দর কষাকষির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যে গোপনে বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে কর্মচ্যুত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকের পরিমাণ ৭০ হাজার। শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে তাদের একাংশকে পুনর্বহাল করলেও এ অশুভ খেলা থেকে তারা নিষ্ক্রান্ত হয়নি, যা সত্যিকার অর্থেই দুর্ভাগ্যজনক।

সর্বশেষ খবর