সোমবার, ৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

আবাসন খাতের সংকট

জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিন

দেশের আবাসন খাত স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সংকটের সম্মুখীন। এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৪৫৮টি উপাখাতও অভিন্ন অবস্থার শিকার। করোনাভাইরাস জনমনে এতটাই আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে যে, মানুষ এই সাক্ষাৎ দুর্দিনে টাকা হাত ছাড়া করতে চাচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্য চাকরি সব ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকায় প্লট বা ফ্ল্যাটের কিস্তি পরিশোধে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে ফ্ল্যাট অথবা প্লটের অর্ডার দেওয়া বিরল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্মাণ খাত বন্ধ থাকায় সারা দেশে লাখ লাখ শ্রমিক বেকারত্বে ভুগছে। আবাসন শিল্পে অচলাবস্থা থাকায় দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প খাত সিমেন্ট শিল্পে অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। রড তৈরির সঙ্গে জড়িত স্টিল মিলগুলো ধুঁকে ধুঁকে চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আবাসন খাতের ভালোমন্দ নির্ভর করছে দেশের অর্থনীতির ওপর। দেশের অর্থনীতিতে সুবাতাস বইলে এ খাত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করবে। যে কারণে আবাসন খাতের খাদে পড়ে যাওয়ার অবস্থা থেকে পুনরুত্থানে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- স্তব্ধ হয়ে পড়ায় আবাসন খাতের ৫৯ লাখ নির্মাণ শ্রমিকের জীবন-জীবিকা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ খাতে নেমেছে বিপর্যয়। এসব খাতের দুই হাজারের বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দুই লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির মুখে। আবাসন খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে। অচলাবস্থার কারণে সে আয়ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। আবাসন কোম্পানিগুলোতে কর্মরত ২০ হাজার নির্মাণকাজ ব্যবস্থাপক, ১০ হাজার ডিপ্লোমা প্রকৌশলী এবং তিন হাজার স্নাতক প্রকৌশলীর জীবিকায়ও সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে আবাসন খাতের পুনরুজ্জীবনে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। একদিকে অর্ধকোটিরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান অন্যদিকে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় নিশ্চিত করতে কীভাবে এ খাতের সংকট দূর করা যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যতœবান হতে হবে। মানুষ যাতে প্লট ও ফ্ল্যাট ক্রয়ে এগিয়ে আসে সে জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। প্লট ও ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন খরচ কমিয়ে আনার বিষয়টিও বিবেচনায় আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর