মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ

আমলাতান্ত্রিকতা যেন বাধা না হয়

করোনাভাইরাসে দুনিয়ার সব দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছে। অর্থনীতির যে অকল্পনীয় পতন ঘটেছে দুনিয়াজুড়ে, সে অবস্থা থেকে উঠে আসতে কত কাল লাগবে-তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। তবে অন্ধকারের মধ্যেও বাংলাদেশের জন্য রয়েছে আলোর ঝলকানি। রয়েছে অবিশ্বাস্য ধরনের বড় সুযোগ। করোনাভাইরাসের দ্বারা বিশ্বব্যাপী শিল্প-বাণিজ্য যে প্রচন্ড ধাক্কা খায়, সেই ‘তিক্ত অভিজ্ঞতা’র আলোকে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ তাদের কারখানাগুলো চীন থেকে সরিয়ে নিতে চাইছে। সরিয়ে নিয়ে এসব উৎপাদন ইউনিটকে বসানো হবে অন্য কোনো দেশে। সুযোগটা কাজে লাগাতে খুবই সচেষ্ট ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ আরও কিছু দেশ। প্রশ্ন উঠেছে, চীনত্যাগী কারখানাগুলোকে নিজ ভূখন্ডে পাওয়ার সুযোগ কি বাংলাদেশ কাজে লাগতে পারবে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, কিছু দিনের মধ্যেই অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থজনিত আন্তর্জাতিক টানাপড়েনের কারণে চীন থেকে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহারের হিড়িক পড়ে যাবে। এই বিনিয়োগ তেমন দেশেই যাবে, যে দেশকে সংশ্লিষ্টরা ‘নির্বিঘ্ন ফলদায়ক’ ভাববে। তাই, বিভিন্ন দেশ এই বিনিয়োগ আকর্ষণে বহুবিধ ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে। দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার জন্য কাজ করছে। এর মধ্যে তিনটি নির্দিষ্ট করা আছে জাপান, ভারত ও চীনের জন্য, যাতে তারা বাংলাদেশে তাদের পণ্য উৎপাদন ইউনিট সহজে স্থাপন করতে পারে। শতভাগ রপ্তানিমুখী জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ কিছু প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছে বেজা। এ ব্যাপারে তারা যে সুপারিশমালা তৈরি করেছে সেগুলো অনুমোদনের জন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছে। বর্তমানে বেজা রপ্তানি অঞ্চলের বিনিয়োগকারীদের ১০ বছরের ট্যাক্স হলিডে দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। এর মধ্যে তিন বছর সম্পূর্ণরূপে কর মওকুফ থাকবে। এ মেয়াদটি বাড়িয়ে সাত বছর করার চিন্তাভাবনা করছে বেজা। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে হলে আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের ইতি ঘটাতে হবে। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়িয়ে অবস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলাও জরুরি।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর