বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

ওষুধের দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক

মুনাফাখোরদের দমন করুন

মানুষ মানুষের জন্য এমন মনোভাব তাদের কাছ থেকেই আশা করা যায় যারা শুধু চেহারা নয়, মনমানসিকতার দিক থেকেও মহান স্রষ্টার সেরা সৃষ্টির উত্তরাধিকারিত্ব বহন করেন। হাত-পা, চোখ-কান সব কিছু অন্য মানুষের মতো থাকা সত্ত্বেও যারা মনমানসিকতায় কল্পকথার লোভী দৈত্যের মতো খাই খাই আচরণধারী তাদের আর যাই হোক মানুষ বলে অভিহিত করা যায় না। করোনাকালে দেশের মানুষ যখন ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ সংকটের শিকার, তখন একশ্রেণির ভদ্রবেশী মানুষ এটিকে যেভাবেই হোক মুনাফার সুযোগ হিসেবে বেছে নিয়েছে। দেশের সিংহ ভাগ কল-কারখানার উৎপাদনে স্থবিরতা চললেও ওষুধ কোম্পানিগুলোতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণ উৎপাদনও চলছে। স্বীকার করতেই হবে কাঁচামালের সংকটের কারণে দু-একটি ওষুধের দাম বাড়লেও ওষুধ কোম্পানিগুলো অন্যান্য ওষুধের দাম বাড়ায়নি। তারপরও অসৎ ওষুধ বিক্রেতা বা কোম্পানিদের একাংশ কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ইচ্ছামতো ওষুধের দাম হাঁকছে। অ্যান্টিবায়োটিক ও সাধারণ অন্যান্য ওষুধ বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ থেকে চারগুণ দামে। করোনাভাইরাসের প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বহুল প্রচারিত কয়েকটি ওষুধের দাম নেওয়া হচ্ছে আকাশছোঁয়া। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ওষুধের দামের তারতম্য সবচেয়ে বেশি। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার অভিযানের পরও থামানো যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের এসব কারসাজি। বাড়তি মুনাফার লোভে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে বিক্রি করছে ফার্মেসিগুলো। ৭৫০ টাকার আইভেরা ৬ এমজি ট্যাবলেট ২৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ৫০ টাকার স্ক্যাবো ৬ এমজি ট্যাবলেট বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। ২৫ টাকার জিংক ট্যাবলেট ৫০ টাকা, ২০ টাকার সিভিট ট্যাবলেট ৫০ টাকা, ৩৬০ টাকার রিকোনিল ২০০ এমজি ৬০০ টাকা, ৪৮০ টাকার মোনাজ ১০ এমজি ট্যাবলেট ১০০০ টাকা, ৩১৫ টাকা অ্যাজিথ্রোসিন ৫০০ এমজি ট্যাবলেট ৬০০ টাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে। ফার্মেসি মালিকদের অভিযোগ, তারা ওষুধের সরবরাহই পাচ্ছেন কম। বিক্রয় প্রতিনিধিরাই বেশি দাম নিচ্ছেন দোকানিদের কাছ থেকে। করোনাভাইরাস সংক্রমণে মানুষের অস্তিত্ব যখন বিপন্নপ্রায়, তখন জীবন বাঁচানোর উপাদান ওষুধের ক্ষেত্রে অতি মুনাফাখোরী মনোভাব দুর্ভাগ্যজনক। যারা এ অপকর্মে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজার ব্যবস্থা করা হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর