বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বিপর্যস্ত কাগজশিল্প

সুরক্ষার পদক্ষেপ নিন

গত তিন দশকে যেসব শিল্প আকাশছোঁয়া সাফল্য দেখিয়েছে কাগজশিল্প তার মধ্যে একটি। তিন দশকে দেশের অভ্যন্তরে কাগজের ব্যবহার বেড়েছে অন্তত ২৫ গুণ। এ চাহিদা মিটিয়েও দেশের কাগজশিল্প তাদের উৎপাদিত পণ্য দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছে। কিন্তু করোনাভাইরাস এ শিল্পের টুঁটি চেপে ধরার মতো বিপদ সৃষ্টি করেছে। দেশে কাগজ কলের সংখ্যা এখন ১০৬টি। এসব মিলের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন। এর মধ্যে কাগজের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মাত্র ছয় লাখ টন। ফলে ৬৪টি কাগজকল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। রপ্তানি আয় এ শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে প্রতিকূলতার মধ্যেও। কিন্তু করোনা মহামারী বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে ৭০ হাজার কোটি টাকার কাগজ শিল্পে। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় একদিকে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে রপ্তানিতেও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। গত এপ্রিল পর্যন্ত যে শিল্পের রপ্তানি আয় ছিল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে গত মে মাসে তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

এর ফলে এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত লাখ লাখ মানুষের জীবিকা হুমকিতে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে বাঁচাতে নগদ সহায়তা বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন কাগজশিল্প খাত সংশ্লিষ্টরা। করোনার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতের মধ্যে কাগজ শিল্প অন্যতম। স্থানীয় বাজারে চাহিদার অপ্রতুলতার কারণে রপ্তানি বৃদ্ধি করা ছাড়া দেশীয় কাগজ মিলসমূহের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এই শিল্পের উৎপাদিত পণ্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি না করলে এই শিল্প খাত নিশ্চিতভাবেই রুগ্নশিল্পে পরিণত হবে। কাগজশিল্প যে করোনাকালের দুঃসময়ে গভীর সংকটে পড়েছে এ ব্যাপারে সরকারও সচেতন। এজন্য গত রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সভায় কাগজ শিল্পের অস্তিত্ব রক্ষায় রপ্তানি খাতে নগদ প্রণোদনা আরও ১০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন এ শিল্প সংশ্লিষ্টরা। বিকাশমান এ শিল্পের অস্তিত্বের স্বার্থে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর