বুধবার, ১০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্ব খাদ্য মন্দার আশঙ্কা

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বা ডব্লিউএফপির অ্যাক্সিকিউটিভ ম্যানেজার লন্ডনে খাদ্য সংকট সম্পর্কিত এক সম্মেলনে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম যে হারে বেড়ে চলছে তাতে সারা বিশ্ব আরেক সুনামির আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। এ সুনামি হবে ক্ষুধার সুনামি। নীরব এ সুনামি কেড়ে নেবে কোটি কোটি মানুষের প্রাণ। এশিয়া, আফ্রিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রবল হিংসাত্মক প্রতিবাদ গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। জনগণ খাবার না পেয়ে হিংস্র হয়ে উঠছেন। আন্দোলন ক্রমশ হিংসাত্মক হতে চলেছে। হাইতিতে ইতিমধ্যে খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। ক্যামেরুনের অবস্থা তো ভয়াবহ। সেখানে মানুষ দিনে তিনবারের বদলে দুবার খাওয়ার অভ্যাস করছেন। বিশ্ব ব্যাংকের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী গত তিন বছরে খাদ্যসামগ্রীর মূল্য ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে যা অভাবনীয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত, চীন, বাংলাদেশে খাদ্যশস্য, মাংস ও দুগ্ধজাত সামগ্রীর চাহিদা কম করে হলেও দ্বিগুণ বাড়বে। এদিকে কমবে উৎপাদন, ফলে মূল্যবৃদ্ধি যা হবে তা কেউ ভাবতে পারবেন না। সদ্য খাদ্যসংকট নিয়ে শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। ডব্লিউএফপি বিশ্বের কাছে ১০০ কোটি ডলারের সহায়তা চেয়েছে। কিন্তু এই অর্থ পাওয়ার পর ডব্লিউএফপির বহু কর্মসূচি চরম বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে ম্যানেজার আগেভাগে জানিয়ে দেন। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ডব্লিউএফপিকে ৪০ কোটি ডলার দিয়েছে সংকট মোকাবিলার জন্য। ব্রিটেন দিয়েছে পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব জানিয়েছেন, ‘২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বে দরিদ্রের সংখ্যা অর্ধেক হ্রাস করার যে লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছিল তা আকস্মিক এ খাদ্যসংকটের ফলে মাঠে মারা যেতে বসেছে। অর্থের লোভে খাদ্যদ্রব্যের চাষ বাদ দিয়ে জৈব ইন্ধন জেট্রোফ ইত্যাদির চাষ করায় যে খাদ্য সংকটের জন্ম হলো তা জৈব ইন্ধন সম্পর্কে আমাদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। বরং জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে অধিক উৎপাদনক্ষম খাদ্যদ্রব্যের চাষ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাতে খাদ্যভান্ডারও কমবে না, আবার কৃষকের কোনো ক্ষতিও হবে না।’    
আফতাব চৌধুরী

সর্বশেষ খবর