করোনাকালে গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতনভাতা নিয়ে সংকট নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ শিল্পের জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা দেওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে না। গত চার দশকে গার্মেন্ট শিল্পের মালিকদের অবস্থা ফিরেছে এ শিল্পের শ্রমিকদের পরিশ্রমের ফসল হিসেবে। হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এমন গার্মেন্ট মালিকের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু করোনাকালীন বিপর্যয়ের সময় তাদের অনেকের মধ্যে যে কৃপণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। মালিকপক্ষের অনুদারতার কারণেই রাজধানীর উত্তরায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দক্ষিণখান মোল্লারটেক সংলগ্ন এলাকার ‘ভার্সেটাল গার্মেন্টস’ পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেও বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জেও হয়েছে বিক্ষোভ। শ্রমিকরা উত্তরার আজমপুর এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুপাশে অবস্থান নেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। শ্রমিকরা বেতন-ভাতা ও পুনর্নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই ১২০০ শ্রমিকের মধ্যে ৩০০ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে ছাঁটাইদের পুনর্নিয়োগ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। শ্রমিক বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ২০০ থেকে ২৫০ শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল। পরে শ্রমিকদের দাবির ব্যাপারে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে-এমন আশ্বাস পেয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা। সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে গার্মেন্ট শিল্পে যাতে অস্থিরতা দেখা না দেয়। কিন্তু মালিকদের একাংশ কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই এবং বেতন ভাতা না দেওয়াসহ নানান ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে প্রকারান্তরে শ্রমিক অসন্তোষে যেভাবে মদদ জোগাচ্ছে তা তাদের নিজেদের সর্বনাশই ডেকে আনবে। এটি তারা যত দ্রুত বুঝতে পারবেন, ততই মঙ্গল।