শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ

মাওলানা আবূ মূসা

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। কবে নাগাদ এ মহামারী থেকে পরিত্রাণ মিলবে তার সঠিক কোনো সমাধান কেউ দিতে পারছে না। এরই মধ্যে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর  নতুন আরেকটি শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ায় কঠিন বিপাকে পড়েছেন কওমি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এক. মাদ্রাসার নেজামুল আওকাতের মতো বাসাবাড়িতেও নেজামুল আওকাত বানানো অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সুন্নাতসহ জামাতে আদায় করা, বেশি বেশি কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত করা (হাফেজের জন্য দৈনিক অন্তত তিন পারা ও গাইরে হাফেজের জন্য এক পারা), বাদ ফজর সূরা ইয়াসিন, বাদ মাগরিব সূরা ওয়াকিয়া ও বাদ ইশা সূরামূলক নিয়মিত তেলাওয়াত করা, বিশেষ ফজিলতপূর্ণ সূরাগুলো তেলাওয়াতে ইহতিমাম করা এবং বাদ-আসর দোয়া জিকর ও তাসবিহর মধ্যে সময় অতিবাহিত করা।

দুই. অন্যান্য ফারেগ সময়ে আমাদের আকাবির ও আসলাফদের মাখতুবাত ও মালফুজাত মুতালায়া করা।

তিন. তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য নফলের প্রতি যত্নবান হওয়া।

চার. যেসব ছাত্র যে জামাতে ভর্তি হয়েছে বা হবে সেই জামাতের মৌলিক কিতাবগুলোর মুকাদ্দিমাত ও মাবাদিয়াতকে হল করার চেষ্টা করা। পাঁচ. সম্ভব হলে প্রত্যেক ফন বা বিষয়ের একাধিক কিতাব মুতালায়া করা। যেমন : ইলমে নাহু, ইলমুছ ছরফ, ইলমুল ফিকহ, ইলমে তাফসির, ইলমে হাদিসের একাধিক কিতাব মুতালায়া করা।

ছয়. মাদ্রাসার মতো বাসাবাড়িতে দীনি পরিবেশ কায়েমের চেষ্টা করা। সম্ভব হলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে তালিমের ব্যবস্থা করা। মহিলাদের বেশি বেশি পর্দার কথা বলা। পুরুষদের দাঁড়ি রাখতে উদ্বুদ্ধ করা। যুবকদের দীনদার বানানোর ফিকির করা। বেনামাজিদের প্রতি ওয়াক্তে নামাজের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া এবং এলাকার মসজিদগুলোকে তালিম তাবলিগ ও তাজকিয়ার মেহনত দ্বারা প্রাণবন্ত করা। সাত. সামাজিকভাবে অসহায় দরিদ্রদের খোঁজখবর নেওয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো। পারিবারিকভাবেও এ সুযোগে আব্বা-আম্মাসহ মুরব্বিদের খেদমত করা এবং সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। এক কথায়, গোটা সমাজকে দীনি ধাঁচে গড়ে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা করা। লকডাউনের এ সময়টিতে উপরোক্ত কাজগুলো করতে পারলে প্রতিটি তালিবুল ইলম যোগ্য হয়ে উঠবে, সামাজিকভাবে পরিচিতি লাভ করবে, সমাজকে দীনি পরিবেশ উপহার দেবে এবং নিজের সময়কে দারুণভাবে কাজে লাগাতে পারবে। আর একই সঙ্গে করোনার এই মহাদুর্যোগ থেকে যেন আমরা খুব শিগগির নাজাত পাই- এজন্য আমাদের দৈনন্দিন আমলসমূহ পাবন্দির সঙ্গে পালন করা। আমরা যদি বেশি নেক আমল করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারি তাহলে আমরা নাজাত পাব ইনশাল্লাহ! আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাফ করে দিন। দীনের খাদেম হিসেবে কবুল করে নিন। আমিন।

লেখক : শাইখুল হাদিস ও গবেষক।

 

সর্বশেষ খবর