শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ

অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠার প্রত্যাশা

এত কঠিন সময়ে এবং এত অনিশ্চয়তা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে জাতীয় বাজেট তৈরির কোনো নজির আছে বলে মনে হয় না। জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে কভিড-১৯ মহামারী কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। সে কারণে অর্থনৈতিক ঝুঁকিমুক্ত ও পুনরুদ্ধার করার যেকোনো পরিকল্পনা একান্তই অনুমাননির্ভর হতে বাধ্য। দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন, নতুন অর্থবছরে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। এই আইনি নির্দেশনা আছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এমন সুযোগ নিতে করদাতাদের অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে জমি, ফ্ল্যাট, বিল্ডিং ও অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজার, বন্ড বা অন্য কোনো সিকিউরিটিজে। এ সুবিধা নিতে ১০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। নেই কোনো জরিমানা। অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগে অর্থ পাচার ও কর ফাঁকি কমবে। এ পদক্ষেপে অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থপ্রবাহ, কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি আমদানি ও রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং এবং ভুয়া বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ পাচার আর কর ফাঁকি বন্ধের পদক্ষেপও নিয়েছেন। প্রস্তাবিত বাজেটের আলোকে বিনিয়োগ ভুয়া ও অর্থ পাচার প্রমাণিত হলে ৫০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের অভিমত, করোনাভাইরাসের কারণে বিধ্বংস অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে এ অর্থ বিশেষভাবে অবদান রাখবে। দেশ থেকে অর্থ পাচারের প্রবণতা বৃহৎ আকারে কমবে। দেশের টাকা দেশেই বিনিয়োগ হবে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। করোনাভাইরাসজনিত চলমান সংকটের কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের নতুনভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি করা সময়ের দাবি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দারও পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে আমাদের অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। অর্থনীতিতে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি এবং তা বজায় রাখার নিমিত্তে পর্যাপ্ত সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য এবং অন্যদিকে বেসরকারি খাতেও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড গতিশীল রাখার ঘোষণা এলো করোনাকালের এ বাজেটে। করোনা দুর্যোগের সময়ে অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে।

সর্বশেষ খবর