করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যায় এই মহামারীর উৎপত্তিস্থল চীনকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। তবে চীন দুই মাসের মধ্যে সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। বাংলাদেশের চতুর্থ মাসেও সংক্রমণরেখা ঊর্ধ্বমুখী। এখন যেসব দেশে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে, তার একটি বাংলাদেশ। মোট জনসংখ্যার বিচারে এখনই চীনের চেয়ে বাংলাদেশে সংক্রমণের মাত্রা বেশি। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৫২০ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন এক হাজার ১৭১ জন। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, আক্রান্তের সংখ্যা শনিবারেই চীনকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। এই আক্রান্তের সংখ্যার তালিকায় বাংলাদেশ এখন ১৮ নম্বরে চলে এসেছে। চীনের অবস্থান ১৯ নম্বরে। অবশ্য দৈনিক ও গত এক সপ্তাহে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ দশে। কিন্তু এসব দেশের মধ্যে করোনার নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে দুই দেশের একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা কম পরীক্ষা হচ্ছে মেক্সিকোতে। আর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে কম পরীক্ষা হচ্ছে শুধু আফগানিস্তানে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত চীনে মোট আক্রান্ত ৮৪ হাজার ৬৭১ জন। যা বাংলাদেশের চেয়ে ২৮০ জন বেশি। আক্রান্তের ক্ষেত্রে সমান হলেও চীনের জনসংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। আইইডিসিআরের মতে, শুরুতে লকডাউন থাকায় চীনের তুলনায় বাংলাদেশে সংক্রমণ ধীরগতিতে হয়েছিল, কিন্তু লকডাউন ক্রমেই ঢিলেঢালা হয়ে যায় এবং পরে উঠে যায়। এখন দেশে সংক্রমণ মাঝারি। চীনে কম সময়ে নিয়ন্ত্রণ আনতে পেরেছিল কারণ তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করিয়েছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশে তা সম্ভব হয়নি। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, চিকিৎসা সুবিধা-এসব ক্ষেত্রে চীনের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। এ মহামারী প্রাকৃতিকভাবে কমে আসবে না। সক্রিয়ভাবে রোগী খুঁজে বের করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা ও জাতীয় নির্দেশনা অনুসরণ করে করোনা চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। নির্দেশনা মানলে অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবহার কম হবে, মানুষের ঝুঁকি কমবে।