প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক চেষ্টায় করোনা কভিড-১৯ মহামারী আকারে ছড়ায়নি- এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। করোনা দ্রুত নিরাময়ের নিমিত্তে নিম্নবর্ণিত প্রস্তাবসমূহ সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছি-
১. দীর্ঘদিন যাবৎ দেশে লকডাউন চলছে এবং অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিনা প্রয়োজনে কাউকে বাইরে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। কিন্তু এ কথা কেউ মানছে না। ‘প্রয়োজনের’ সত্য-মিথ্যা যাচাই করা কঠিন। বিনা প্রয়োজনে কেউ বাইরে যাবেন না-কথাটি নীতি কথার মতো। চুরি করবেন না, খুন করবেন না নীতি কথা দিয়ে চুরি বা খুন মোটেই ঠেকানো যেত না-যদি না আইনে শাস্তির ব্যবস্থা থাকত। ইতিমধ্যে দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাটে মানুষ, গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহনের প্রচুর ভিড়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আইন কঠোর না হওয়ায় সামাল দিতে পারছে না। তাই লকডাউনের উদ্দেশ্য দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
২. করোনা মহামারী থেকে রক্ষা পেতে (বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর) কারফিউ (সান্ধ্য আইন) জারি করলে মানুষ মানতে বাধ্য হবে এবং ১০ দিন বা দুই সপ্তাহের মধ্যে মহামারীর প্রকোপ প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সৌদি আরবে ঈদের আগে ও পরের দিনগুলোতেও কারফিউ জারি করা হয়েছিল। কারফিউ জারি করলে অন্তত দুদিন আগে ঘোষণা দিয়ে কারফিউর দিনগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী/মালামাল সংগ্রহ করে রাখার জন্য বলতে হবে।৩. ত্রাণসামগ্রী বিতরণের জন্য লোক জমায়েত না করে তালিকা করে ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া অথবা মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া অত্যন্ত ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত। আমাদের দুঃখটা এই যে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগে ও পরে গরম পানি লবণ দিয়ে গড়গড়া করা, নাকে-মুখে গরম পানির ভাপ দেওয়ার বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফেরেন্সে প্রথম শুনেছি। স্বাস্থ্য অধিদফতর, আইইডিসিআর কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থা, ব্যক্তি এ কথা বলেননি। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ উৎপাদনের পর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের গবেষণাগারে নমুনা জমা দিয়েছে এসকেএফ এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ১০ মে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত ব্যবহার হচ্ছে কি না এবং কী ফল হচ্ছে তা আমরা জানি না। প্রধানমন্ত্রী চিরায়ত কথা আরও চমৎকার করে বলেন-‘মৃত্যুর ভয়ে জীবন থেমে থাকে না’। তার কথা শুনে আমরা সবাই অনুপ্রাণিত ও সাহসী হই। তেমনি আবার তিনি যখন মহামারী থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন তখন আমরা তার ভারাক্রান্ত মন দেখে ব্যথিত হই। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউনের পরিবর্তে কারফিউ দেওয়ার বিষয়টি সদয় বিবেচনার প্রস্তাব করছি।
লেখক : কলাম লেখক।