বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সিমেন্টশিল্প ধ্বংসের পাঁয়তারা

শুল্ক-করে বিবেচিত পদক্ষেপ জরুরি

অর্থনীতির ভিত তছনছ করে দিয়েছে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস। পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। থমকে গেছে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প। প্রি-ফ্যাব্রিকেটিড স্টিল বিল্ডিং আমদানিতে অন্যায্য শুল্কমুক্ত সুবিধার ফলে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশীয় সিমেন্টশিল্প হুমকিতে পড়েছে। শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধায় বাড়ছে চোরাচালান। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশে সক্রিয় সিমেন্ট উৎপাদন কারখানা রয়েছে ৩৫টি। দেশীয় সিমেন্টের চাহিদা ৩৫ মিলিয়ন টন হলেও কারখানাগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৮০ মিলিয়ন টন। এ খাতে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। সরকারি কোষাগারে প্রতি বছর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব জমা হয়। আয়করও পায় বিপুল পরিমাণ। শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের স্বয়ংসম্পূর্ণ শিল্প খাতের সুরক্ষায় আমদানি হওয়া শুল্কমুক্ত সুবিধায় প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিংয়ের ওপর বাড়তি শুল্করোপ করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া, অসমন্বয়যোগ্য অগ্রিম আয়কর, তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে সিমেন্টের নিম্নমুখী দামের প্রবণতা এবং নদী ও সড়কপথে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সব সিমেন্ট কোম্পানি ক্ষতির সম্মুখীন। সরকার লকডাউন ঘোষণার পর এপ্রিল মাস পর্যন্ত সিমেন্ট কারখানাগুলোতে ৯০ ভাগ উৎপাদন বন্ধ ছিল, যেটা এখন ৬০ ভাগে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা খরচও কমেনি। করোনায় বিপর্যস্ত সিমেন্টশিল্পের প্রয়োজন বড় ধরনের কর প্রণোদনা; কিন্তু তা হয়নি। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে প্রায় ১৪ শতাংশ হারে শুল্ক অব্যাহত রাখা হয়েছে। ফলে বিশাল আর্থিক চাপ সইতে হচ্ছে এ শিল্পকে। আমাদের আশা, সংকট নিরসনে সরকার সিমেন্টের শুল্ক-করে বিবেচিত পদক্ষেপ নেবে।

সর্বশেষ খবর