শুক্রবার, ১৯ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রাণঘাতী করোনা, বাজেট এবং জনশক্তি খাতের ভবিষ্যৎ

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

প্রাণঘাতী করোনা, বাজেট এবং জনশক্তি খাতের ভবিষ্যৎ

বিশ্বজুড়ে করোনা সংকট এখনো তীব্রবেগে চলমান। করোনার কারণে ভেঙে গেছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। মাসের পর মাস লকডাউনের কারণে সব দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডই থমকে গেছে। এতে করে গোটা বিশ্বের মানুষের জীবন-জীবিকাও আজ মহাসংকটে। ফলে বিশ্বের বড় এক শ্রমশক্তি একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়বে, বাড়বে বেকারত্ব, বাড়বে চরম দারিদ্র্যের হারও। ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ভবিষ্যদ্বাণী করেছে আগামীতে উন্নত দেশগুলোকেও বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

প্রাণঘাতী করোনার কারণে আজ পৃথিবীজুড়ে যে অর্থনৈতিক ঝুঁকি, স্থবিরতা তৈরি হয়েছে সেই স্রোতধারা থেকে আমরা মোটেও মুক্ত নই। বরং দিনকে দিন আমাদের ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ বেড়েই চলেছে। উন্নত দেশের তুলনায়, দরিদ্র বা মধ্যম আয়ের দেশগুলোর আগামীতে কতটা ভয়াবহ সময় পাড়ি দিতে হবে তা নিয়েও চলছে বিস্তর গবেষণা। সেই মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি আর অঘোষিত লকডাউনের কারণে আমাদের অর্থনীতি আজ মহাসংকটে, দুর্বিপাকে। খোদ বিশ্বব্যাংক এমন কথাও বলেছে জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে সবচেয়ে দুরহ কাজ। কারণ বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ শঙ্কা করছে, করোনা দুঃসময় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিকে আড়াই বা তিন শতাংশে নামিয়ে আনতে পারে। যদিও সম্প্রতি ঘোষিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি নিয়ে ভিন্ন আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘিরে যখন এরকম চ্যালেঞ্জ, উদ্বেগ, সংশয় দৃশ্যমান তখন এর মাঝেও এখন পর্যন্ত আমাদের জনশক্তি খাত শক্তভাবেই দাঁড়িয়ে আছে বলে বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। প্রবাসী আয় এখন পর্যন্ত সেই অর্থে বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়নি বলে সরকারি বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে। সে হিসাবে গত কয়েক মাসে প্রবাসী আয় প্রবাহ যেভাবে চলমান থেকেছে তা এই ক্রান্তিকালে খুবই আশা জাগানিয়া সংবাদ। করোনা ভাইরাসের এ মহাদুর্যোগের মাঝেও প্রবাস থেকে রেমিট্যান্সের ধারা আগের মতোই অব্যাহত ছিল।

চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই দেখা গেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এক হাজার ৭০৬ কোটি ডলার বা ১৭ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স হিসেবে প্রিয় মাতৃভূমিতে প্রেরণ করেছেন। বলা হচ্ছে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। ১১ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তথ্য দিয়েছে। এমনটি হওয়ার পেছনে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানকেই যুক্তিযুক্ত মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর এবং বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করতে চলতি অর্থবছর (২০১৯-২০২০) থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়া হয়। আমি বলব, এ সিদ্ধান্তের ইতিবাচক ফলাফলটা আমরা হাতেনাতে পেয়েছি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমাদের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। তবে করোনার কারণে লকডাউন শুরু হলে মার্চ-এপ্রিলে কিছুটা রেমিট্যান্সের গতি শ্লথ হয়ে যায়। কিন্তু ঈদে সেই গতি দ্রুত পুনরায় বেড়ে যায়। অবশ্য এতেই সন্তুষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা যাচ্ছে এপ্রিল থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ১১ হাজার অভিবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছে। অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ধারণা করছে আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরও ২৫ হাজার কর্মী কর্মহীন হয়ে দেশে ফিরে আসবে। কভিড-১৯ এর কারণে বিদেশে নির্মাণ খাত এবং সেবা খাতে কর্মরত শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট মন্দায় অনেক কোম্পানি আগামীতে আরও শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারে। তা ছাড়া আনডকুমেন্টেড আরও ২০% শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে। 

১১ জুন জাতীয় সংসদে ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে। এ বাজেটেও ঘোষণা করা হয়েছে প্রবাসীরা ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন। করোনাভাইরাস ও বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে আগামী অর্থবছরে প্রবাস আয় প্রবৃদ্ধি কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েই গেছে। বাজেট পেশকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিগত অর্থবছরের বাজেটে প্রবাস আয় প্রেরণে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, রেমিট্যান্স প্রেরণে বর্ধিত ব্যয় লাঘব করা এবং বৈধ পথে অর্থ প্রেরণে উৎসাহিত করা।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের সামগ্রিক কল্যাণ ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণ, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি ও উক্ত বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, বৈদেশিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব কমিয়ে আনা এবং প্রবাস আয় প্রবাহ আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে এক কোটি ২০ লাখের অধিক অভিবাসী কর্মী কর্মরত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে, বিগত ১০ বছরে পেশাজীবী, দক্ষ, আধা-দক্ষ ও স্বল্প-দক্ষ ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৬৬ লাখ ৩৩ হাজারের অধিক বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে, যা এ পর্যন্ত মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে ২০১৯ সালে সাত লাখের অধিক জনের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে।’ বাজেট বক্তৃতায় তিনি প্রত্যাগত অভিবাসী শ্রমিকদের ঋণ দেওয়ার জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলেছেন। এ ছাড়া একই উদ্দেশে ওয়েজআর্নার্স কল্যাণ বোর্ডকেও ২০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে বলে বলা হয়েছে। আজকে প্রবাসী আয় এবং বিভিন্ন দেশে শ্রমশক্তি প্রেরণ নিয়ে অর্থমন্ত্রী যে কথাগুলো বলেছেন এর সবই সত্য। তবে এ সাফল্য ও অর্জনের পেছনে দেশের জনশক্তি প্রেরণকারী বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরাট অবদান রয়েছে। বিভিন্ন দেশে জনশক্তি প্রেরণে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে সরকার প্রদত্ত অনেকগুলো শর্ত ও ধাপ সম্পন্ন করে একজন কর্মীকে বিদেশে প্রেরণ করতে হয়। এ করোনাকালে অর্থমন্ত্রী নতুন শ্রমবাজার তৈরি এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরিকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন স্বপ্নের কথা বলেছেন। আমি সহমত পোষণ করেই বলছি আমাদের জনশক্তি প্রেরণ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন খাতকে আরও শক্তিশালী করতে হলে পাবলিক-প্রাইভেট (পিপি) পার্টনারশিপকে ভীষণরকম গুরুত্ব দিতে হবে। সে কারণে সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে আরও বেশি গতিশীল করার জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ দরকার। সেটা করা হলে কর্মদক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বিদেশে কর্মী পাঠানো আরও সহজতর হবে। বিশেষ করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের এখনই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। করোনাকাল কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব শ্রমবাজারে ট্র্যাডিশনাল শ্রমিকের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্টের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। তাই দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট তৈরির পরিকল্পনাটা এখনই আমাদের গ্রহণ করতে হবে।

আমাদের জনশক্তি খাত হলো অর্থনীতির সুন্দরবন। সমুদ্র সৃষ্ট কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ তৈরি হলে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় সুন্দরবন। একইভাবে অর্থনৈতিক দুর্যোগ এলেই আমাদের বড় ভরসার জায়গা হয় জনশক্তি খাত, মানে প্রবাসী আয়। আজকে যখন বড় বড় কলকারখানায় উৎপাদন কমে গেছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ধস, আমদানি-রপ্তানি প্রায় বন্ধ, গার্মেন্ট খাতে শত অনিশ্চয়তা তখন প্রবাসী আয় সুন্দরবনের মতোই অর্থনৈতিক দুর্যোগ থেকে আগলে রেখেছে। তবে যে কথা আগেই বলেছি এ খাত নিয়ে এখনই একটি পথনকশা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কেননা সামনে দেশের বেকারত্ব মোচন এবং আরও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য আমাদের শ্রমবাজার অধিকতরো সম্প্রসারণ ছাড়া বিকল্প আর কোনো পথ নেই। কেননা সামনের দিনগুলোতে শ্রমবাজার দখলের একটা লড়াইও দেখা যাবে। ইতিমধ্যে আমাদের সার্কভুক্ত দেশসমূহে করোনাভাইরাসের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য তীব্র লড়াইয়ে নামবে ভারত, ভিয়েতনাম পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাও। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে ভিয়েতনাম, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা সুরক্ষিত থাকায় তারা বিশ্ব শ্রমবাজার আয়ত্তে নিতে এখনই প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব অভিবাসীকর্মী প্রেরণে বাংলাদেশকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। সেখানে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরি, নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা, ট্র্যাডিশনাল শ্রমবাজারে কর্মী প্রেরণ অব্যাহত রাখাসহ মাইগ্রেশন ডিপ্লোম্যাসি জোরদার করতে হবে। মনে রাখতে হবে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশই আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। এ দেশগুলোকে কোনোভাবেই দূরে ঠেলে দেওয়া যাবে না। এর জন্য আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও বেশি জোরদার করতে হবে। তবে আমি এ বিষয়ে মাননীয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়কমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি এবং সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।

সর্বশেষ অর্থবছরে দেশে অতি দারিদ্র্য কমে হয়েছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতি বছর এ হার ভালোই কমে আসছিল। কিন্তু করোনাকালে যে সব পাল্টে গেছে তা বলাই বাহুল্য। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি বলছে করোনা দুর্যোগে সামনে দারিদ্র্য হার বেড়ে হবে ৩৫ শতাংশ। আরেকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে করোনা মহামারীর কারণে আয় উপার্জন থমকে যাওয়ায় বর্তমানে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ দারিদ্র্য বেড়ে ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ হয়ে যেতে পারে। মানে হলো এটি দুই গুণ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ঠিক এরকম প্রেক্ষাপটকে মোকাবিলা করতেই আমাদের জনশক্তি প্রেরণ খাত সঠিকভাবে সাজাতে হবে। তাই জনশক্তি খাতের সুরক্ষায় কয়েকটি প্রস্তাব খুবই সংক্ষেপে নিচে উল্লেখ করছি।

কভিড-১৯ এর কারণে যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছে দ্রুত তাদের ডাটাবেইজ করতে হবে।

যেসব প্রত্যাগত অভিবাসী শ্রমিক বয়স্ক এবং পুনরায় ফেরত যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই তাদের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

একেবারেই ফিরে আসা শ্রমিকদের কর্মসংস্থান এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহায়তা করতে হবে।

প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের মাধ্যমে বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে আরও বেশি সক্ষম করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।

বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরিতে জোর দিতে হবে।

অভিবাসন খাতের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করতে হবে। করোনার এ বিপর্যয়ে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অর্থনীতির পুনর্জীবনের ভিত্তিটি নির্মাণ করা। সেটি নির্মাণ করতে হলে অবশ্যই আমাদের প্রবাসী বা বৈদেশিক আয়ের বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। শুধু প্রবাসী আয় বাড়ছে বা রেমিট্যান্স বেশি আসছে এ আত্মতুষ্টিতে নিমজ্জিত থাকলেই হবে না। বিগত দিনের সফলতা ব্যর্থতাকে ফলোআপ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বায়রার সঙ্গে এ বিষয়ে ভার্চুয়াল সভা করে মতামত গ্রহণ করতে পারে। প্রবাসী শ্রমিকদের সার্বিক সুরক্ষা এবং শ্রমবাজার আরও বাড়ানো এ দুই লক্ষ্যকে ধরেই আমাদের সামনে  এগোতে হবে। জনশক্তি প্রেরণ খাতে কোনো বিপর্যয় ঘটলে আমাদের অর্থনীতির জন্য সেটা হবে বিরাট এক হুমকি। তাই প্রয়োজন জনশক্তি খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ, পথনকশা তৈরি এবং মাইগ্রেশন ডিপ্লোম্যাসি জোরদার করে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা।

লেখক : শ্রম অভিবাসন বিশ্লেষক এবং চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি।

সর্বশেষ খবর