রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সারা পৃথিবী উল্টিয়ে পাল্টিয়ে ওপর-নিচ হয়ে গেছে

আবু হেনা

সারা পৃথিবী উল্টিয়ে পাল্টিয়ে ওপর-নিচ হয়ে গেছে

এখন থেকে ১৪০০ বছর আগে আল কোরআনে একটি ঘটনার উল্লেখ করে বিশ্বস্রষ্টা রব্বুল আলামিন সমগ্র মানবজাতিকে সতর্ক করেছেন : ‘এবং আমি জনপদকে উল্টিয়ে ওপর-নিচ করে দিলাম এবং তাদের ওপর পাথরের টুকরো বর্ষণ করলাম।’ সুরা হিজর, আয়াত ৭০। এর কারণও একইসঙ্গে বিবৃত করা হয়েছে- ‘তারা পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করত নিরাপদ বাসের জন্য। এরপর প্রভাতে মহানাদ তাদের আঘাত করল। সুতরাং তারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের কোনো কাজে এলো না। সুরা হিজর, আয়াত ৮২-৮৪। ‘এ এজন্য যে, আল্লাহ প্রত্যেকের কৃতকর্মের প্রতিফল দেবেন। আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।’ সুরা ইবরাহিম, আয়াত ৫১। পবিত্র কোরআনে বিশ্বজগৎ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্ব বিবৃত হয়েছে। ‘পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং তাতে পবর্তমালা স্থাপন করেছি, আমি তাতে প্রতিটি বস্তু উদ্গত করেছি সুপরিকল্পিতভাবে।’ সুরা হিজর, আয়াত ১৯। ‘এবং তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্যও।’ সুরা হিজর, আয়াত ২০। ‘এরপর যারা সীমা লঙ্ঘন করেছিল মহানাদ তাদের আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল।’ সুরা হুদ, আয়াত ৬৭। সৃষ্টির সেরা মানুষের কাছে আল্লাহ কী প্রত্যাশা করেন তা কোরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি নিষেধ করেন অশ্লীলতা, অসৎকর্ম ও সীমা লঙ্ঘন। তিনি তোমাদের উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।’ সুরা নাহল, আয়াত ৯০। ‘তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে তা স্থায়ী। যারা ধৈর্য ধারণ করে আমি নিশ্চয়ই তাদের তারা যা করে তা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।’ সুরা নাহল, আয়াত ৯৬। ‘তিনি আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন মানদ-।’ সুরা আর রহমান, আয়াত ৭। ‘যাতে তোমরা ভারসাম্য লঙ্ঘন না কর।’ সুরা আর রহমান, আয়াত ৮। ‘তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্টজীবের জন্য।’ সুরা আর রহমান, আয়াত ১০। ‘কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জালিম ছিল তাদের যা বলা হয়েছিল, তার পরিবর্তে তারা অন্য কথা বলল। সুতরাং আমি আকাশ থেকে তাদের প্রতি শাস্তি পাঠালাম যেহেতু তারা সীমা লঙ্ঘন করছিল।’ আল কোরআন। কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে একটি ভারসাম্য রয়েছে এবং এ ভারসাম্য রক্ষার জন্য রয়েছে একটি মানদ-। যারা প্রকৃতির ক্ষতিসাধন করে, সীমালঙ্ঘন করে তাদের জন্য শাস্তি রয়েছে যা আকাশ থেকে প্রেরিত হয়। ‘এরা মানুষের জন্য এক বার্তা যাতে এ দ্বারা তারা সতর্ক হয় এবং জানতে পারে যে তিনিই একমাত্র ইলাহ্ এবং যাতে বোধশক্তিসম্পন্নরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ সুরা ইবরাহিম, আয়াত ৫২। ‘তোমাদের আগে বহু মানবগোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি যখন তারা সীমা অতিক্রম করেছিল।’ সুরা ইউনুস, আয়াত ১৩। ‘আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো জুলুম করেন না, বস্তুত মানুষ নিজেদের প্রতিই জুলুম করে থাকে।’ সুরা ইউনুস, আয়াত ৪৪। ‘কিন্তু মানুষ নিজেদের কার্যকলাপে পরস্পরের মধ্যে ভেদ সৃষ্টি করেছে। প্রত্যেকেই ফিরে আসবে আমার কাছে।’ সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৯৩। ‘আমরা আকাশসমূহ ও পৃথিবী এবং এদের মধ্যে কোনো কিছুই ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ সুরা দুখান, আয়াত ৩৯। ‘আমরা এ দুটি অযথা সৃষ্টি করিনি, কিন্তু অধিকাংশই তা জানে না।’ আল কোরআন। ‘আমরা তাদের আগে আরও মানবগোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি যারা ছিল তাদের অপেক্ষা শক্তিতে প্রবল, তারা দেশে বিদেশে ভ্রমণ করে বেড়াত।’ আল কোরআন। এখন পৃথিবীর একমাত্র পরাশক্তি, ধনসম্পদ ও জ্ঞানবিজ্ঞানে সবচেয়ে সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। তার পরের স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারের ওপরে এবং আক্রান্ত ২০ লাখ ছাড়িয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে মৃতের ও আক্রান্তের সংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার হিসাবে ব্রাজিলের স্থান দ্বিতীয়। পৃথিবীময় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৭১ লাখ এবং মৃত ৪ লাখ ১০ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪ কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। এডিবির হিসাব অনুযায়ী করোনার কারণে বৈশ্বিক ক্ষতির পরিমাণ ৮ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উন্নত দেশগুলো।

ব্রিটেনের বন্যা, আমেরিকা ও আশপাশের দেশে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়, রাশিয়া ও ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে হাজার হাজার একর বন ধ্বংস হওয়া, ইতালি ও ফ্রান্সে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু সবই মানুষের তৈরি জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। পরিবেশ দূষণের কারণে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে পড়বে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে হেপাটাইটিস বি, সংক্রামক ব্যাধি, মেনানজাইটিসের মতো গ্রীষ্মকালীন রোগগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূর্যের বিকিরণকৃত আলট্রাভায়োলেট রশ্মির অনুপ্রবেশ বৃদ্ধির কারণে ত্বকের ক্যান্সার ও খাদ্যাভাসে তেজস্ক্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। পরিবেশ দূষণের অপরাধে চীন এক নম্বর অপরাধী রাষ্ট্র। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে সারা বিশ্বকে গ্রাস করেছে করোনাভাইরাস। এর উৎপত্তি চীনে এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র।

মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর জন্য বহুলাংশে দায়ী। আল কোরআনে এ ভেদাভেদ সৃষ্টি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবৃত হয়েছে। এ ভেদাভেদ সৃষ্টির মূলে রয়েছে দাসপ্রথা, যার জন্য যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সমভাবে দায়ী। করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ এবং মৃতের হিসাবে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু মানুষ নিজেদের কার্যকলাপে পরস্পরের মধ্যে ভেদ সৃষ্টি করেছে। প্রত্যেকেই ফিরে আসবে আমার কাছে।’ সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৯৩।

মে মাসের শেষ সপ্তাহে মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড নামে একজন কৃষ্ণাঙ্গকে পুলিশ হেফাজতে নির্মমভাবে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে সর্বস্তরের মানুষ ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে।

নিশ্চিতভাবে ধ্বংসের মুখোমুখি পৃথিবীতে আজ আল কোরআনকে নতুন করে আবিষ্কার করার সময় এসেছে। ভাইরাসের সূচনা সময় থেকে প্রায় ছয় মাস অতিক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু আজ অবধি এর  প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। আইনের শাসন দ্বারা মহাবিশ্ব চলে। পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এক অমোঘ সত্য, তেমন অমোঘ সত্য এই যে, আলোর গতি প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল হবেই। বিশ্বব্রহ্মা-ের ভার এর শক্তির সমষ্টি থাকবে অমোঘভাবেই ধ্রুব। উচ্চতর চাপ প্রবাহিত হবে নিম্নতর চাপের দিকে। প্রতিটি ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া হবেই। এসবই হচ্ছে প্রকৃতি-প্রদত্ত অমোঘ আইন। এ আইনের প্রয়োগে কোনো বাচবিচার নেই, উচ্চ-নীচ সবাই এ আইনের কাছে সমান। প্রকৃতিতে সূর্য ও তার চেয়ে পরাক্রান্ত নক্ষত্রকেও বিধিবদ্ধ নিয়ম মেনে চলতে হয়। কিন্তু প্রকৃতিতে আইনের শাসন অমোঘ দেখেও মানুষ তা বোঝে না। বিশ্বজোড়া সন্ত্রাস, পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন চলমান সংকটের মূল উপাদান।

পরিবেশ বিপর্যয় ও জলবায়ুর পরিবর্তনের অভিঘাত। প্রাকৃতিক পরিবেশের অবনতি সারা দুনিয়াকে হুমকির সম্মুখীন করেছে। এসব প্রক্রিয়ার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, মহাসাগর স্ফীত হচ্ছে, বাড়ছে মরুকরণের হুমকি। জলবায়ুবিজ্ঞানীরা সতর্কবাণী দিয়েছেন, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বেড়ে গেলে জৈব, অজৈব, সমাজ-সভ্যতা সবকিছুর ভারসাম্য স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বর্তমানে যেভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মান-মাত্রা পার হতে এ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই বিপদ ঘটে যাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা ১০ সেন্টিমিটার থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ২১০০ সালের মধ্যে ৫০ সেন্টিমিটার থেকে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ উচ্চতা বৃদ্ধির নিম্নমাত্রার হিসাবটিও যদি সত্য হয় তাহলে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ যারা উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে বাস করছে, তারা জল-নিমজ্জনের মধ্যে পড়বে। পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার সব বরফ গলে গেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৩.৫ মিটার বেড়ে যাবে। সম্প্রতি নাসা একটি ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ করেছে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের চূড়ার ক্ষয় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির আরও ভয়াবহ অশনিসংকেত দিচ্ছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মতে, কার্বন-ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০১৪ সালে বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতি রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। মানুষের প্রকৃতিবিরুদ্ধ নানাবিধ অপকর্মের ফলস্বরূপ বায়ুম-লের ক্ষতিকারক গ্যাস, বিশেষ করে কার্বন-ডাইঅক্সাইডের মাত্রার সংকটজনক বৃদ্ধি গোলকীয় উষ্ণায়নের প্রধান কারণ। পুঁজিবাদী স্বার্থান্বেষী শিল্পোন্নত দেশগুলো করপোরেট সমাজের স্বার্থের কাছে পরাজিত হয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। উচ্চায়ন ও তৎসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। কার্বন-ডাইঅক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর দীর্ঘস্থায়ী গ্যাসগুলোর কারণে ১৯৯০ থেকে ২০১৪ সালে আবহাওয়ায় উচ্চায়নের হার ৩৪ শতাংশ পরিমাণ বেড়েছে।

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশগুলো উল্লিখিত বিষয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নে তারা আন্তরিক নয়।

সমুদ্রের পানির কার্বনের মজুদ ও পানির অম্লতা পরিবর্তিত হচ্ছে। নদী বা বাতাসে যেসব বর্জ্য নিক্ষিপ্ত বা নির্গত হয় তার অধিকাংশেরই সর্বশেষ অবস্থান হয় সমুদ্রে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গত কার্বন-ডাইঅক্সাইডের এক তৃতীয়াংশ সমুদ্রের পানিতে দ্রবীভূত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশ দূষণ, খাদ্যাভাব, কর্মসংস্থানের সংকটের আবর্তে পৃথিবী নিপতিত।

সাম্প্রতিককালে উষ্ণায়ন ও তৎসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ২০২০-২০৩০ সালের মধ্যে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ১৯টি দেশ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর ৯৩ বিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করার অঙ্গীকার করে। কিন্তু বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন যে মনুষ্যসৃষ্ট- এ ধারণায় বিশ্বাসী নন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৭ সালের ১ জুন ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র প্যারিস চুক্তিতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ব্রাজিলও প্যারিস চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি প্রদান করে।

আজ যখন বিশ্ববাসী করোনাভাইরাসের বিষাক্ত ছোবলে অসহায় হয়ে পড়েছে তখন সঠিক ওষুধ বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা খুঁজে পাননি। এ অবস্থায় বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে এ মহামারী রোধ করতে সচেষ্ট হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত একজন রোগী চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রায় উপস্থিত হয়ে জানিয়েছেন, তিনি মধু ও কালিজিরা খেয়ে সুস্থ হয়েছেন। আল কোরআনে রোগব্যাধি সারাতে মধুর কার্যকারিতা সম্পর্কে এভাবে বলা হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালক মৌমাছিকে তার অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছেন, ঘর নির্মাণ কর পাহাড়ে, গাছে ও মানুষ যে ঘর নির্মাণ করে তাতে। এরপর প্রতিটি ফল থেকে কিছু কিছু খাও, তারপর তোমার প্রতিপালকের সহজ পথ অনুসরণ কর। এদের পেট থেকে বেরিয়ে আসে বর্ণিল পানীয়; যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য, অবশ্যই এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।’ সুরা নাহল, আয়াত ৬৮-৬৯। বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটি মুসলমানের জন্য এটা একটা সুসংবাদ এবং ভাববার বিষয়।

করোনা মহামারীর মৃত্যু ছোবলের সামনে আজ সারা বিশ্ব অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করেছে। এ ভাইরাসের কোনো সঠিক ওষুধ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভাইরাসটির কারণও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। এ মহাদুর্যোগের সময়ে কোরআনের আলোকে এ বিপদের মোকাবিলা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

                লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সর্বশেষ খবর