রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাবাণিজ্য

ব্যয় হবে মানবিক ও সহনশীল

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৪২৫-এ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৩ হাজার ২৪০ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৭৫-এ। সংক্রমণের বর্তমান যে ধারা, তাতে দেশে দৈনিক ২০ হাজার পরীক্ষা হওয়া দরকার। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে দৈনিক ২০ হাজারের বেশি পরীক্ষা করাতে হবে। নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সংক্রমণ থেকে স্বজনদের দূরে রাখতে মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে চাইছে। তবে সে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। স্বাস্থ্য অধিদফতর পর্যাপ্ত সংখ্যায় করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ডেও বাংলাদেশ পিছিয়ে। দেশে সরকারি-বেসরকারি ৬১টি ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। পরীক্ষা করাতে গিয়ে সাধারণ মানুষ অসহায় পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে সেবার নামে চলছে ভয়াবহ বাণিজ্য। এ মহামারীতে রোগীর কাছ থেকে ঘণ্টাপ্রতি অক্সিজেন বিল নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। সুস্থ মানুষকে করোনার ভয় দেখিয়ে নেওয়া হচ্ছে আইসিইউতে। সেবা নিতে গিয়ে লাখ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করতে গিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বেসরকারি হাসপাতালের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কে কীভাবে চিকিৎসা দেবে, মূল্য নির্ধারণ কীভাবে হবে তার কোনো গাইডলাইন না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এভাবে বেসরকারি হাসপাতালে মহামারীর চিকিৎসা চলছে না। উন্নত বিশ্বের পরিস্থিতি তুলনার তো প্রশ্নই আসে না। মানুষকে জমি, বাড়ি বিক্রি করে এনে বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার বিল দিতে হচ্ছে। এ দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালকেই মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার। এখন ব্যবসা নয়, মানুষের জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে আমাদের নামতে হবে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় মানবিক, চিকিৎসা খরচ হতে হবে সহনশীল। আমাদের আশা, বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা খরচের একটি নীতিমালা তৈরি করে দেবেন কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ খবর