মঙ্গলবার, ২৩ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্যার ছোবল

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

বন্যার ছোবল মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আবির্ভূত হয়েছে। করোনাকালে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকা। পানির অভাবে সারা বছর হাহাকারে ভুগেছে যে তিস্তা, সে নদীর ভাঙনে সব হারানোর আতঙ্কে ভুগছে কয়েক হাজার মানুষ। রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ৮০০ পরিবার ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল ডুবতে শুরু করেছে। গাইবান্ধার সব নদ-নদীতেও বাড়ছে পানি। বিশেষ করে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদী অববাহিকার জনমনে উদ্বেগ দানা বেঁধে উঠেছে। বন্যা বাংলাদেশের একটি সাংবৎসরিক বাস্তবতা। উজান থেকে আসা ঢলের কারণে যেমন দেখা দেয় বন্যা তেমন অতিবৃষ্টিপাতও তাতে ইন্ধন জোগায়। বন্যার জন্য দুর্যোগকালীন প্রস্তুতিও নেয় সংশ্লিষ্ট সব এলাকার মানুষ। কিন্তু এবার করোনার লকডাউনে গরিব ও অভাবী মানুষের সামান্য সঞ্চয় যখন শেষ হয়েছে বা হতে চলেছে, সেই সময়ে বন্যার ছোবল জনমনে বিসংবাদের উদ্ভব ঘটিয়েছে। বন্যা প্রতিরোধে বিভিন্ন নদ-নদীতে দেওয়া বাঁধ সংস্কারের চেষ্টা চলছে রুটিনওয়ার্ক হিসেবে। পাইলিং দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা চলছে বন্যার আগ্রাসন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তাব্যক্তিরা এ ব্যাপারে হঠাৎ করেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। করোনাকালে বন্যার থাবা আরও বিস্তৃত হলে তা সংশ্লিষ্ট এলাকার গরিব ও অভাবী মানুষের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনবে। তা ঠেকাতে প্রশাসনকে এখনই সক্রিয় হতে হবে। উপদ্রুত এলাকার অধিবাসীদের জন্য ত্রাণ বিতরণ বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের উদ্যোগ নিতে হবে জরুরিভাবে। বারবার যাতে বন্যা আঘাত না হানে, এটি যাতে আর সাংবৎসরিক অভিশাপ হয়ে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে নদ-নদী খনন এবং বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। এসব কাজে এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করা গেলে কার্যকর সুফল পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এ মুহূর্তে বাঁধ সংস্কারের নামে কোথাও যাতে কেউ পকেটপূর্তির সুযোগ না পায়

তা নিশ্চিত করতে সরকারকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর