শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

নির্দয় শিক্ষাবাণিজ্য

এ অবিমৃশ্যকারিতা বন্ধ হোক

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মুনাফাখোরি মনোভাব করোনাকালেও পাল্টায়নি। অভিভাবকদের দুর্দিনেও চাপ সৃষ্টি করে টিউশন ফি আদায়ের যে কৌশল তারা বেছে নিয়েছে তা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা বলে বিবেচিত হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ টিউশন ফি দিতে ব্যর্থ হলে জরিমানা আদায়ের নিষ্ঠুরতাও দেখানো হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা দুঃসময়ে টিউশন ফি দিতে না পারায় অনলাইন ক্লাস থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে রাজধানীর বেশ কয়েকটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বিরুদ্ধে। অথচ সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি প্রদানে চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর বকেয়াসহ মাসিক বেতন আদায় করতে হবে। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো সরকারি নির্দেশনার কোনো তোয়াক্কাই করছে না। কোনো কোনো স্কুল টিউশন ফি যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারায় জরিমানা আদায় করছে জবরদস্তিভাবে। নির্ধারিত ব্যাংকে টিউশন ফি দিতে গেলে বলা হচ্ছে, বিলম্বের কারণে জরিমানা ছাড়া কোনো ফি জমা নেওয়া হবে না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও করোনোকালে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের সঙ্গে দেখাচ্ছে একই ধরনের সাইলকসুলভ মনোভাব। কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের টিউশন ফি সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলেই জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। টিউশন ফি সম্পর্কে অভিভাবকদের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তারা বলছেন, যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ সেহেতু করোনাকালে টিউশন ফি অন্তত ৫০ শতাংশ কমানো উচিত। অভিভাবকদের কাছ থেকে সুদ ব্যবসায়ী কাবুলিওয়ালাদের মতো হুমকি-ধমকি দেখিয়ে টিউশন ফি আদায় করলেও অনেক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ঠিকমতো বেতন দিচ্ছে না; যা ওপেন সিক্রেট। শিক্ষার নামে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে নিষ্ঠুর বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। বিশেষ করে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে টিউশন ফির বিলম্বের জন্য জরিমানা আদায় শুধু অমানবিকতাই নয়, নৈতিকতার দিক থেকেও অপরাধ। এ অবিমৃশ্যকারিতার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর