প্রতি বছরই সরকারের পরিচালন ব্যয় বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাজেট ঘাটতি। যে কারণে সরকারকে ঘাটতি পূরণে ঋণ করতে হচ্ছে। এ ঋণের সুদ বাবদ বিপুল অর্থ ব্যয় হয়। সরকারের রাজস্ব আদায়ের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় দেখা দিচ্ছে এ অসংগতি। অন্যদিকে অস্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাব, অর্থের অপব্যবহার, সর্বোপরি প্রকল্পের উচ্চ ব্যয়ের কারণেও বাড়ছে ঋণ ও সুদের বোঝা। সরকার রাজস্ব বাড়াতে পারলে বাজেট ঘাটতি সহনীয় থাকত। এতে ঋণ করতে হতো কম। অর্থের অপব্যবহারও কম হতো। ঋণের বোঝা বাড়ছে মূলত পরিচালন ব্যয় ও বাজেট ঘাটতির জন্য। সরকারের উন্নয়ন ব্যয় বাড়লেও সংশোধিত বাজেটে প্রতি বছরই তা কমিয়ে আনা হয়। ২০২০-২১ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। আর এ বিশাল ঘাটতি পূরণে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক এ দুই উৎস থেকে ঋণ নেবে। সে হিসাব অনুযায়ী সরকার আগামী তিন বছর ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করবে ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা দিয়ে অন্তত সাতটি পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয় মেটানো সম্ভব। বাজেট ঘাটতি কমাতে না পারলে সরকারকে ঋণ তো করতেই হবে; যা এড়াতে প্রয়োজন রাজস্ব আদায় বাড়ানো। আর রাজস্ব আদায় বাড়াতে হলে রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি কর ফাঁকিবাজদেরও ধরতে হবে। সরকারের পরিচালন ব্যয় বাড়ছে। আবার উন্নয়ন ব্যয়ও বাড়ছে। প্রকল্প ব্যয় নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে। কোনো কোনো প্রকল্প অতিমূল্যায়িতও করা হয়। আবার কখনো কখনো অদক্ষতার কারণেও প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যায়। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি বাজেটে ব্যয়ের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।