শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রাথমিক শিক্ষায় পরিবর্তন

শাসন নয়, প্রয়োজন উৎসাহ-উদ্দীপনা

প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষাই আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রথম সোপান হিসেবে শিশুদের পরবর্তী শিক্ষার সঙ্গে মানসিক ও ভাষাগত মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তনের ফলে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার কমেছে। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রাথমিক শিক্ষা কাঠামোয় আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। গত ১০ বছর প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা এক বছর মেয়াদি থাকলেও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদি হচ্ছে। এত দিন প্রাক্-প্রাথমিকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হলেও এখন থেকে চার বছরের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০-এও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর ৫২ শতাংশ দেশে তিন বছর মেয়াদি ও ৩৩ শতাংশ দেশে দুই বছর মেয়াদি প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা চালু রয়েছে। দেশে দুই বছর মেয়াদি প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা চালু না থাকায় শহর ও গ্রামে বেসরকারি উদ্যোগে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রসার ঘটেছে। এতে শিক্ষার অসম প্রতিযোগিতা ও বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার কারণে প্রাথমিক শিক্ষায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বইয়ের পাশাপাশি প্রতি বছর পাবে পোশাক, ব্যাগ, জুতাসহ আনুষঙ্গিক জিনিস কেনার টাকাও। কিট অ্যালাউন্স হিসেবে পোশাক, ব্যাগ, জুতা কেনার জন্য প্রতি শিক্ষার্থীকে ১ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও উৎসাহিত হবেন। দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে দেশের ১০৪ উপজেলায় পুষ্টিকর বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সরকার এর নাম দিয়েছে ‘ওয়ান ডে ওয়ান ওয়ার্ড’। এ ছাড়া প্রাথমিকে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে দেশের ৬৪ জেলায় ৬৪ জন মেন্টর নিয়োগ করা হয়েছে। তারা নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম মনিটরিং করছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ালেখার পরিবেশ উন্নত হলে শিক্ষার্থীরা উন্নত স্বপ্ন দেখবে। শাসন নয়, বরং প্রেরণা জুগিয়ে প্রাথমিকের লেখাপড়ার মান বাড়াতে হবে।

সর্বশেষ খবর