বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মর্মান্তিক লঞ্চ দুর্ঘটনা

অসতর্কতার মনোভাবে লাগাম পরান

আবারও লঞ্চ দুর্ঘটনায় ব্যাপকসংখ্যক যাত্রীর প্রাণ সংহার হলো। বুড়িগঙ্গায় সংঘটিত এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার ভিডিও ফাঁস হয়ে পড়ায় এটি নিছক দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড- এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এমনকি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীও রেখেছেন অভিন্ন মত। বলেছেন, হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা মর্নিং বার্ড নামের ক্ষুদ্র দোতলা লঞ্চটি গন্তব্যস্থল শ্যামবাজার কাঠপট্টির ২০০ গজ দূরে ময়ূর নামের একটি দৈত্যাকৃতির লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। ময়ূর ডুবন্ত লঞ্চটির ওপর উঠে যাওয়ায় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ব্যাপকসংখ্যক যাত্রী প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মীরাও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। তারা ঘটনাস্থল থেকে ৩০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এ ছাড়া স্থানীয়রা আরও দুজনকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল উদ্ধার করা লঞ্চের ভিতর আরও একজনের লাশ পাওয়া যায়। উদ্ধারকাজের সময় উপস্থিত বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেছেন, দুই লঞ্চের কর্মীদের অসতর্কতায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন। উদ্ধার অভিযান শেষে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হবে। আমরাও মনে করি, বুড়িগঙ্গায় সংঘটিত লঞ্চ দুর্ঘটনার কারণ যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে উদ্ঘাটিত হতে পারে। তবে অভিজ্ঞতা বলে, অধিকাংশ লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটে কর্মীদের অসতর্কতা ও কাণ্ডজ্ঞানহীনতার জন্য। লঞ্চ মালিকরা যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের বদলে কম পয়সায় আনাড়িদেরও নিয়োগ দেন- এমন অভিযোগ রয়েছে। লঞ্চের ফিটনেসের সংকটও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ এসব দিকে সতর্ক হলে নৌ দুর্ঘটনায় লাগাম পরানো সম্ভব হবে। করোনাকালে বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চের সিংহভাগ যাত্রীর প্রাণহানি এক বিয়োগান্ত ঘটনা। কিছু মানুষের অসতর্কতা ও কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ নিহতদের পরিবারের জন্য যে ট্র্যাজেডি বয়ে এনেছে তা দুর্ভাগ্যজনক।

এ প্রবণতার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর