বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা শনাক্তে মেশিন বিভ্রাট

জাতীয় বেইমানদের চিহ্নিত করুন

করোনাভাইরাসে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর এটি সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। মনে করা হয়, দেশে প্রতিদিনই এ ভয়াবহ ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। শনাক্তকরণের অভাবে যাদের করোনায় আক্রান্ত বলে নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করার সুযোগ নেই। শনাক্তকরণের ধীরগতিতে করোনায় আক্রান্তের এক ক্ষুদ্র অংশকেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে। চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি সত্যিকার অর্থে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক কারণে বাংলাদেশে এ প্রাণঘাতী ভাইরাস জীবনহানির ক্ষেত্রে এতটা আগ্রাসী না হলেও আক্রান্তের সংখ্যা শনাক্ত করা সংখ্যার কয়েক গুণও হতে পারে। করোনার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি, নিরাময়ের সুনির্দিষ্ট ওষুধও নেই। এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রকৃষ্টতম উপায় হলো করোনার উপসর্গ যাদের আছে তাদের চিহ্নিত করে অন্যদের থেকে দূরে রাখা। এজন্য দরকার করোনা টেস্ট। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের মধ্যে লুক্কায়িত দুর্নীতিবাজ ও জাতীয় বিশ্বাসঘাতকদের কারণে সে কাজেও বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা টেস্টের জন্য কেনা হয়েছে ২০০৯ মডেলের মেশিন। ১১ বছরের পুরনো এই মডেলের কিট সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের লুটেরাদের যোগসাজশে কেনা থারমোফিশার ৭৫০০ মডেলের আরটিপিসিআর মেশিনগুলো ২০০৯ সালের পুরনো মডেলের। গত এক দশকে ওই কোম্পানির আরও কয়েকটি নতুন মডেলের মেশিন বাজারে এসেছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী চাহিদার সুযোগ নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরনো মডেলের মেশিনই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে গছিয়ে দিয়েছে। তিন শিফটে উন্নতমানের মেশিনে ২৭০-২৮০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হলেও পুরনো মডেলের মেশিনে অর্ধেক টেস্টও করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আশা করব, যেসব ঠিকাদার পুরনো মডেলের করোনা শনাক্ত মেশিন গছিয়ে দিয়েছেন এবং যারা তা গ্রহণ করেছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্বাসঘাতক ও চোরদের হাত থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে মুক্ত করা সরকারেরই দায়িত্ব।

সর্বশেষ খবর