বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মৈত্রী সেতুতে ধাক্কা

দায়ী নৌযানের চালকদের শাস্তি দিন

বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’-এর ধাক্কায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুতে ফাটল ধরেছে। অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারী যানবাহন চলা। চালকদের অমনোযোগিতায় পোস্তগোলার মৈত্রী সেতুর পিলারে নৌযানের ধাক্কা প্রায়ই ঘটে। এবারের বিপত্তিটি বড় আকারের। এর সঙ্গে জড়িত উদ্ধারকারী একটি নৌযান কর্মীদের গাফিলতি। পোস্তগোলাসংলগ্ন বুড়িগঙ্গায় দৈত্যাকৃতি একটি লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় মর্নিং বার্ড নামের একটি ক্ষুদ্র লঞ্চ। সে লঞ্চটি উদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী নৌযান প্রত্যয় মৈত্রী সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় ক্রেনের সঙ্গে ওপরের অংশের ধাক্কা লাগায় সেতুর পিসি গার্ডার সরে গিয়ে রড বের হয়ে যায়। প্রত্যয়ের ক্রেনের মাথা সেতুর কাঠামোয় ঢুকে যায়। প্রত্যয়ের চালক ও কমান্ডারের গাফিলতিতে ঘটে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা। ক্রেন নিচু করে রাখলেই অনায়াসে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। দুর্ঘটনার পরিণতিতে সোমবার রাতে যানবাহন চলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে সংস্কারের পর মঙ্গলবার রাতে সেতুর একটি লেন খুলে দেওয়া হয়। তবে ভারী যানবাহন চলায় সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সোমবার বুড়িগঙ্গায় সংঘটিত লঞ্চ দুর্ঘটনার পেছনে সুস্পষ্টভাবে দায়ী বড় লঞ্চ চালকের গাফিলতি। দুর্ঘটনার ভিডিওচিত্র দেখলে অনুমিত হয় লঞ্চচালকের দৃষ্টি হয় সামনের দিকে ছিল না, নতুবা ইচ্ছাকৃতভাবে ছোট লঞ্চটির ওপর দৈত্যাকৃতির লঞ্চটি চড়াও হয়েছে। সে লঞ্চ উদ্ধারের কাজ করতে গিয়ে উদ্ধারকারী নৌযান প্রত্যয়ের চালক ও কমান্ডারের আচরণেও প্রকাশ পেয়েছে একই ধরনের বেপরোয়া মনোভাব। লঞ্চসহ নৌযান চালকদের গাফিলতি ও যাচ্ছেতাই আচরণ যেন তাদের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২০ বছরে সারা দেশে সংঘটিত হয়েছে প্রায় ৭০০ লঞ্চ বা যান্ত্রিক নৌযান ডুবির ঘটনা। মৃতের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। নৌপথের নৈরাজ্য বন্ধে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কর্তৃপক্ষীয় নজরদারি বৃদ্ধি পেলেও কয়লা ধুলে ময়লা যায় না প্রবচনের যথার্থতা প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন নৌযান চালকরা। রাজধানীসহ দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পোস্তগোলার মৈত্রী সেতু। এ সেতু কাঠামোয় আঘাত হানার ঘটনায় দায়ী উদ্ধারকারী নৌযান প্রত্যয়ের চালক ও কমান্ডারকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর