মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্যা ও নদী ভাঙন

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে

করোনা দুর্যোগের মধ্যে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে হাজির হয়েছে বন্যা। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, চলমান বন্যার পানি আগামী দু-এক দিনে কমে আবারও বাড়তে শুরু করবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের সাত-আট জেলায় এ বন্যা ২০ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, বর্তমানে দেশের ১৪ জেলার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী। বন্যার কারণে ঘর ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ মানুষের। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হচ্ছে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, গাইবান্ধা ও সুনামগঞ্জ। নদী ভাঙনও বাড়ছে। কোনো নদীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাবে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ১০১টি পয়েন্টের মধ্যে ৪৯টি পয়েন্টে পানি বাড়ছে। আর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে ১৬টি পয়েন্ট। বন্যাদুর্গত এলাকায় বন্যায় ভেসে গেছে ফসলি জমি, খেতের ফসল, বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। অসংখ্য বানভাসি মানুষ বিভিন্ন বাঁধ ও সড়কে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যার্তদের জন্য সহায়তা হিসেবে সরকার থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ও ১০ হাজার ৭০০ মণ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন-জুলাইয়ের বন্যায় সাধারণত চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। সুরক্ষিত হিসেবে চিহ্নিত অনেক এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি বৃদ্ধি ও নদী ভাঙনের প্রবণতা অনুযায়ী এবারে বন্যা অন্য সময়ের চেয়ে তীব্র। করোনাকালে বন্যার্ত মানুষের জন্য আশ্রয়, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা একসঙ্গে দিতে হবে। বাড়তি যত্ন নিতে হবে প্রবীণ, নারী ও শিশুদের। সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে মানবিকতার হাত বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর