মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসা অব্যবস্থা

চৌর্যবৃত্তির হোতাদের নিবৃত্ত করুন

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় যখন দুনিয়াজুড়ে সংকট মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। এ দেশে গত দুই দশকে চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণে ব্যাপক অগ্রগতি ঘটলেও তা যে পর্যাপ্ত এবং যথাযথ মানসম্মত নয়, প্রতি বছর বিদেশে কয়েক লাখ রোগীর চিকিৎসা গ্রহণ তারই প্রমাণ। করোনাকালে প্রমাণিত হয়েছে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা চিকিৎসাকে দেশবাসীর অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে সংবিধানে যুক্ত করলেও তাদের প্রত্যাশা পূরণে আমরা ইপ্সিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারিনি। করোনাকালে দেশের হাসপাতালগুলোয় আইসিইউ এবং অক্সিজেনের সংকট চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমাদের সীমাবদ্ধতা। রাজধানীতে এ সংকট প্রকট এবং বিভাগীয় সদরগুলোয় তা সব সীমা অতিক্রম করেছে। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় বিরাজ করছে তথৈবচ অবস্থা। আমরা স্বীকার করতে চাই, চিকিৎসা ক্ষেত্রে যেসব দেশের অবস্থান আকাশছোঁয়া তারাও করোনাকালে হিমশিম খাচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশের হাতে এমন কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই, যার বদলৌতে করোনা সংকটের সমাধানে প্রত্যাশিত সুফল অর্জিত হবে। তবে প্রশ্ন ওঠে, জাতীয় বাজেটে প্রতিটি সরকারের আমলে যে বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সে অর্থের একটা ক্ষুদ্র অংশ ব্যয় করে সরকারি হাসপাতালগুলোয় আইসিইউ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি কেন। দেশের সব জায়গায় না হোক, রাজধানী ও বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালে অক্সিজেন সুবিধাসম্পন্ন চিকিৎসা ইউনিট গড়ে তোলা হয়নি কেন? এমনকি করোনাকালেও এ ধরনের সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটাতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদফতর। বরং তারা করোনা পরীক্ষার নামে পুরনো মডেলের মেশিন কিনে পকেট ভরার অপকৌশলের বাস্তবায়ন করেছে। চৌর্যবৃত্তির মহারথীরা মহামারীর সময়েও যে তাদের বদভ্যাস থেকে নিবৃত্ত হতে পারেনি এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। এই একটি অধিদফতরের কারণে করোনা মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত সরকারের সুকীর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমরা আশা করব, স্বাস্থ্য অধিদফতরকে বেপরোয়াদের কবলমুক্ত করতে সরকার এখন থেকেই ভাববে। ঘাপটি মেরে থাকা চৌর্যবৃত্তির কুশীলবদের আইনের আওতায় আনতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর