শিরোনাম
বুধবার, ৮ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ডব্লিউটিসির ফাউ মাতব্বরি

পণ্য পরিবহনে জটিলতা সৃষ্টি করছে

বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় অভিশাপ লাল ফিতার দৌরাত্ম্য এবং অকারণে জটিলতা সৃষ্টির প্রবণতা। করোনাকালে এমনিতেই স্তব্ধ হয়ে পড়েছে শিল্প-বাণিজ্য। বিকাশমান সিমেন্ট শিল্প পথে বসার মতো বিপদে। ইস্পাত শিল্পও লাল বাতি জ্বলার আশঙ্কায় ভুগছে। এমন অবস্থা আরও অনেক শিল্পের ক্ষেত্রে বলা যায়। দেশের শিল্প-বাণিজ্যের পৃষ্ঠদেশে বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে ছোট জাহাজে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) নৈরাজ্য। বিদেশ থেকে মাদার ভেসেলে যেসব পণ্য আসে বন্দরে নাব্য কম থাকায় সেগুলো দূরসমুদ্রে নোঙর করা হয়। তারপর সেখান থেকে আমদানি করা পণ্য ছোট জাহাজে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে খালাস করা হয়। আমদানিকৃত পণ্যের এক বড় অংশ সিমেন্ট শিল্প ও ইস্পাতের কাঁচামাল, কয়লা, সার ও ভোগ্যপণ্য। মাদার ভেসেল থেকে পণ্য আনায় নিয়োজিত ছোট জাহাজগুলোর উপকূল অতিক্রমের অনুমতিপত্র থাকার পরও ডব্লিউটিসির ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করায় অভ্যন্তরীণ রুটে পণ্য পরিবহনে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। এ নৈরাজ্যে পণ্য পরিবহনে বিশৃঙ্খলা ও সাপ্লাই চেন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ছোট জাহাজের পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা থাকলেও অন্যের মুখ চেয়ে থাকতে হচ্ছে। কারণ আমদানি পণ্য নিজস্ব জাহাজে পরিবহনে বাধা দিচ্ছে ডব্লিউটিসি। কর্ণফুলী নদী থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন নৌঘাটে নিয়ে ওইসব জাহাজের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। লাইসেন্স ও পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে জাহাজ আটক করা হচ্ছে। কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব ছোট জাহাজে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য আনলে তাদের খরচ কম হয়। পরিবহনের জন্য অন্যের ওপর নির্ভরতা এড়ানো যায়। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ছোট জাহাজগুলোর উপকূল অতিক্রমের অনুমতি থাকার পরও তাদের ওপর ডব্লিউটিসিকে ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ দেওয়ায় যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হচ্ছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মুখ থুবড়ে পড়া শিল্পকারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে এ নৈরাজ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারকদের  আশু হস্তক্ষেপ বাঞ্ছনীয় হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর