বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

জেনেশুনে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবিরা গুনাহ

মুফতি রুহুল আমিন কাসেমী

জেনেশুনে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবিরা গুনাহ

আল্লাহ রব্বুল আলামিন  কোরআনুল কারিমের সুরা ফুরকানে একজন খাঁটি মুমিনের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন, যারা কখনো মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না। আল্লাহ অন্যত্র বলছেন, ‘তোমরা মিথ্যা থেকে আত্মসংবরণ কর।’ সুরা হজ। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মিথ্যা সাক্ষ্যদান শিরকের সমান।’ আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, তাবারানি। তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা জাহান্নামের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত নিজের পা-ও নড়াতে পারবে না।’ ইবনে মাজাহ।

মূলত কোরআন ও হাদিসের আলোকে মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা চারটি বড় গুনাহে লিপ্ত হয়ে নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অন্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। প্রথমত, দুনিয়ার লোভে পরে অন্যের ক্ষতি করার জন্য মনগড়া মিথ্যা অপবাদ দেয়। দ্বিতীয়ত, সে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে তার ওপর জুলুম করে। তৃতীয়ত, সে যার পক্ষে সাক্ষ্য দেয় তার ওপরও জুলুম করে, কেননা সে তার জন্য হারাম সম্পদ ভোগে সহায়তা করে দেয়। ফলে তার জন্য জাহান্নাম অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। চতুর্থত, আল্লাহর বিধান সমাজের সুষ্ঠু সুবিচার থেকে মজলুমকে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। এ মর্মে বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজির বর্ণনায় রয়েছে, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি কি তোমাদের জঘন্যতম কবিরা গুনাহ কী কী বলব না? সাহাবিরা আরজ করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ! অবশ্যই বলবেন। তিনি বললেন, তাহলে শোনো, তা হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা, মাতা-পিতাকে কষ্ট দেওয়া, আর সাবধান মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, সাবধান মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। হাদিসের বর্ণনাকারী বলেন, শেষের কথাটি তিনি এতবার পুনরাবৃত্তি করেন যে, আমরা মনে মনে বলেছিলাম, আহা, তাঁর কথা যদি এখানেই শেষ হতো তাহলে কতই না ভালো হতো?’ আল্লাহ আমাদের সবাইকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া থেকে হেফাজত করুন এবং খাঁটি ইমান ও আমল নিয়ে দুনিয়া থেকে যাওয়ার তৌফিক দান করুন।

লেখক : গবেষক, ইমাম ও খতিব, কাওলা বাজার জামে মসজিদ দক্ষিণখান, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর