রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক

সভ্য দেশে এমন নৈরাজ্য চলতে পারে না

দেশে অবৈধভাবে পরিচালিত হাসপাতাল, ক্লিনিকের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। কোনো সভ্য দেশে এমন তথ্য প্রকাশ পেলে ভিরমি খাওয়ারই কথা। তবে এ দেশের মানুষ এতটাই সর্বংসহা যে একে তারা নিয়তির লিখন হিসেবেই মেনে নিয়েছে। আর এগুলো দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তারা প্রজাতন্ত্রের প্রজাদের ট্যাক্সের টাকা থেকে আসা বেতনকে ভাবেন ফাও ইনকাম হিসেবে। অবৈধ কায়কারবারে অভ্যস্ত যারা তাদের কাছ থেকে আসা উৎকোচকে তারা প্রকৃত আয় ভাবেন। ফলে অন্নদাতা দেশবাসী নয়, আইন ভঙ্গকারী অপরাধী চক্রের প্রতিই তাদের যত আনুগত্য। দেশবাসীর প্রতি কৃতঘœ একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণেই সরকারি লাইসেন্স নিয়ে শুরু করা ১৭ হাজার ২০০ হাসপাতাল, ক্লিনিকের প্রায় ১২ হাজার সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরিচালিত হলেও তা দেখার কেউ নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের মেয়াদ তিন-চার বছর আগে শেষ হলেও নবায়নের গরজ অনুভব করছেন না। এসব হাসপাতাল, ক্লিনিক চলছে যথারীতি সবার চোখের সামনে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনো নিবন্ধন না নিয়ে কোথাও কোথাও শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়েও অসাধু ব্যবসায়ীরা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসাবাণিজ্য। কেউ কেউ লাইসেন্সের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন পাঠিয়েই ব্যাঙের ছাতার মতো হাসপাতাল খুলে বসেছেন। কেউ বা পরিচালনা করছেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অবৈধ ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখা বোধগম্য কারণেই উদাসীন। ফলে রিজেন্ট হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠান মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। করোনা টেস্টের অনুমতি পাচ্ছে। প্রতারণার ফাঁদ পাতার সুযোগ মিলছে। শুধু রিজেন্ট হাসপাতাল নয়, এ ধরনের ভুয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক কথায় অসংখ্য এবং এগুলো টিকে আছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্তাব্যক্তিদের চোখের সামনে। এগুলো যে তাদের অজ্ঞাতে নয়, তা পিয়ন থেকে কর্তাব্যক্তিদের সম্পত্তির হিসাব নিলেই ধরা পড়বে। কোনো সভ্য দেশে এমন নৈরাজ্য চলতে পারে না, চলা উচিত নয়। নিজেদের সেই কাতারে রাখতে হলে অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক শুধু নয়, তাদের লালনপালনকারীদেরও ধরতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর