রবিবার, ১৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

জিলহজের প্রথম দশকের আমল

যুবায়ের আহমাদ

জিলহজের প্রথম দশকের আমল

আল কোরআনে আল্লাহ বলছেন, ‘শপথ প্রভাতের, শপথ ১০ রাতের।’ সুরা ফাজর, আয়াত ১-২। সব তাফসিরবিদের মতেই এ ১০ রাত জিলহজের প্রথম ১০ রাত। আল্লাহ এ ১০ রাতের কসম করার ফলে এ রাতগুলোর বিশেষ মর্যাদা প্রমাণিত হয়েছে। জিলহজের প্রথম দশকের ফজিলত ও তাৎপর্য হাদিসেও বর্ণিত হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের নেক আমলের চেয়ে অন্য কোনো দিনের আমলই উত্তম নয়। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এ দশকের আমলের চেয়ে উত্তম নয়? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এর চেয়ে উত্তম নয়, তবে ওই ব্যক্তি ছাড়া, যে তার সর্বস্ব নিয়ে জিহাদে অংশগ্রহণ করল এবং কিছুই নিয়ে ফিরে এলো না।’ বুখারি। এ দশকের বিশেষ আমলগুলো হলো- ১. নফল রোজা ও নামাজ : এ দিনগুলোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো প্রথম নয় দিন রোজা রাখা এবং প্রথম দশকের রাতগুলোয় বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া। এর এক দিনের রোজার ফলে এক বছরের রোজা ও এক রাতের ইবাদতের ফলে লাইলাতুল কদরের (হাজার মাসের চেয়েও বেশি) ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যাবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এ দিনগুলোর একেকটি রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। এ ১০ রাতের প্রতিটি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য।’ তিরমিজি। বিশেষ করে আরাফার দিনে (৯ জিলহজ) রোজা রাখা। এ রোজার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আরাফার দিনে রোজা রাখবে, তার সম্পর্কে আল্লাহর দরবারে এ আশা করা যায় যে এ রোজা তার পূর্ববর্তী এক বছরের এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে।’ ইবনে মাজাহ। ২. চুল-নখ না কাটা : যারা কোরবানি করার নিয়ত করেছেন তারা জিলহজের প্রথম থেকে কোরবানি না করা পর্যন্ত নখ-চুল কাটা থেকে বিরত থাকবেন। এ প্রসঙ্গে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জিলহজের চাঁদ দেখলে এবং তোমাদের মধ্যে কেউ কোরবানির নিয়ত করলে সে কোরবানি না করা পর্যন্ত চুল-নখ কাটা থেকে বিরত থাকবে।’ মুসলিম। যে ব্যক্তি কোরবানি করতে সক্ষম নয় সেও এ আমল করতে পারে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার কাছে একটি দুধের উট বা ছাগল ছাড়া কিছুই নেই। আমি কি এ দিয়েই কোরবানি করব? তিনি বললেন, না, বরং সেদিন তুমি তোমার চুল কাটবে (মু-াবে বা ছোট করবে), নখ কাটবে, মোচ ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার পূর্ণ কোরবানি বলে গণ্য হবে।’ নাসায়ি। ৩. ঘরে-বাইরে তাকবির বলা : আমরা ৯ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর ওয়াজিব তাকবির বলি। কিন্তু প্রথম দশকজুড়েই ঘরে-বাইরে যে তাকরিব বলার সুন্নত আছে তা আজ বিলুপ্তপ্রায়। 

লেখক : খতিব, বাইতুশ শফীক মসজিদ, বোর্ডবাজার, গাজীপুর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর