সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচার

জনস্বার্থে দূর হোক আইনগত বাধা

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে নেতৃস্থানীয় ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশের ওষুধের বাজারও বিশাল এবং তা ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু দেশের উৎপাদিত ওষুধ সম্পর্কে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারিত না হওয়ায়। ভালোমানের অনেক ওষুধ দেশে তৈরি হওয়া সত্ত্বেও অনেকে বিদেশি ওষুধ কিনছেন অজ্ঞতার কারণে। সে ওষুধ আসল না নকল তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়ও ঘটছে সরকারের ভুল নীতির কারণে। গণমাধ্যমে ওষুধের বিজ্ঞাপন না থাকায় ভোক্তারা ডাক্তারদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছেন। ওষুধ কোম্পানিগুলো বিপণন কার্যক্রমের নামে ডাক্তারদের পেছনে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেও গণমাধ্যমে তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার না হওয়ায় ভোক্তারা ডাক্তারের ইচ্ছার কাছে নিজেদের জিম্মি রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে বাজারে নকল ভেজাল ওষুধের থাবা বিস্তার হচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। সঠিক ওষুধ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ভোক্তারা। করোনাকালে দেশের মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন করার ব্যাপারে ওষুধ কোম্পানিগুলোর কোনো ভূমিকাই নেই। বিজ্ঞাপন প্রচারে ওষুধ প্রশাসনের নানা ধরনের আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় ওষুধ কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন প্রচারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। অথচ জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সংবাদপত্রে ওষুধ কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচার হলে তাতে মানুষ আরও বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হতো। পত্রপত্রিকায় ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হলে বহুক্ষেত্রে বিদেশি ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে মানসম্মত ইনসুলিন। অথচ অজ্ঞতার কারণে এ মুহূর্তে বিদেশি ইনসুলিন বিক্রিই হচ্ছে বেশি। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই গণমাধ্যমে ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচার সম্পর্কে বিরাজমান আইনগত বাধ্যবাধকতার অবসান হওয়া উচিত। নকল ভেজাল ওষুধের বদলে ভোক্তারা যাতে মানসম্মত ওষুধ ব্যবহার করতে পারে তার নিশ্চয়তা বিধানে সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর