শিরোনাম
শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ফার্মেসির নামে যাচ্ছেতাই

এ নৈরাজ্য বন্ধে কঠোর হতে হবে

চিকিৎসা নৈরাজ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের লিখন হয়ে বিরাজ করছে যুগ যুগ ধরে। এ নৈরাজ্যের নিত্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওষুধ বিকিকিনির ফ্রিস্টাইল পদ্ধতি। দুনিয়ার সব সভ্য দেশে চিকিৎসকের চিকিৎসাপত্র ছাড়া ওষুধ কেনা অসম্ভব হলেও বাংলাদেশে সে ‘বালাই’ নেই বললেই চলে। সভ্যতার কোন স্তরে যে আমাদের বসবাস তা নিয়ে বড় মাপের প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে এ যাচ্ছেতাই ব্যবস্থা। দেশের ৭১ শতাংশ ফার্মেসি মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করলেও দেখার কেউ নেই। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী দেশে লাইসেন্সধারী ফার্মেসির সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ৭১৪। এর মধ্যে নবায়ন করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮৪৪টির। বাকি ৮৪ হাজার ৮৭০টি লাইসেন্স নবায়ন হয়নি, যা মোট লাইসেন্সের ৭১ শতাংশ। এসব দোকানে ওষুধ মজুদ, প্রদর্শন ও বিক্রয় ১৯৪৬ সালের ড্রাগস রুলস অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও তা দেখার কেউ নেই। ঠাকুরগাঁও জেলায় লাইসেন্সধারী ফার্মেসির সংখ্যা ৪৭টি। এর প্রতিটির লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি কর্তৃপক্ষ। দেশে লাইসেন্সবিহীন দোকানের সংখ্যা লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ। প্রায় প্রতিটি ফার্মেসির বিরুদ্ধে রয়েছে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগ। তথাকথিত মডেল ফার্মেসিগুলোও তা থেকে মুক্ত নয়। বরং তারা মডেল সাইনবোর্ডকে নির্বিচারে ব্যবহার করছে মানহীন ওষুধ বিপণনে। ফার্মাসিস্ট ছাড়াই চলছে দেশের সিংহভাগ ফার্মেসি। যেগুলোয় ফার্মাসিস্ট রয়েছে সেগুলোও তৃতীয় গ্রেডভুক্ত। উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ের ফার্মেসিগুলোর অবস্থা তথৈবচ। নকল ও মানহীন ওষুধ বিক্রির আখড়া হিসেবে এগুলো ব্যবহৃত হয়। এমনিতেই ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচারে নানা ধরনের বিধিনিষেধ থাকায় ভোক্তারা নিজেদের পছন্দমতো ওষুধ কিনতে পারছেন না। ওষুধ বিপণনে যে নৈরাজ্য চলছে তা জাতীয় লজ্জার ঘটনা। এ নৈরাজ্য বন্ধে সরকারকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে। মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিপণনের বিরুদ্ধে হতে হবে কঠোর। ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচারে যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা প্রত্যাহারের কথাও ভাবতে হবে। চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর