শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয়ণ

মুজিববর্ষের মহোত্তম উদ্যোগ

যান্ত্রিক সভ্যতা মানুষকে উৎকর্ষতার শীর্ষে পৌঁছার সুযোগ করে দিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে একই সঙ্গে স্বীকার করতে হবে, যান্ত্রিকতার অবাধ বিস্তার মানুষের অস্তিত্বের জন্যও ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে। কলকারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া বায়ুদূষণের কারণ ঘটাচ্ছে এবং বৃদ্ধি করছে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা; যার পরিণতিতে মেরুদেশের বরফ গলছে, বাড়ছে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা। বাংলাদেশসহ সাগরপ্রান্তের নিচু দেশগুলোর উপকূলীয় এলাকায় দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও নদী ভাঙনের অভিশাপও ঘোরতর হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। এ সংখ্যা এরই মধ্যে কয়েক লাখ ছাড়িয়েছে। লড়াকু জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় অভ্যস্ত। জলবায়ুতে নেতিবাচক পরিবর্তনে ইতোমধ্যে যে দুর্যোগ-দুর্বিপাকের সৃষ্টি হয়েছে তা ঠেকাতে বাংলাদেশ আগেভাগে লড়াই শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার জলবায়ু উদ্বাস্তু প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের জন্য কক্সবাজারের খুরুশকুলে বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এর ফলে বছরের পর বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের অশুভ প্রভাবে যারা ভিটামাটি ও ঠিকানা হারিয়ে উদ্বাস্তু-জীবন যাপন করছিলেন তারা আপন ঠিকানা পাবেন। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর বাস্তুহারা মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে আশ্রয় নেন কক্সবাজার বিমানবন্দরের পাশের সরকারি খাসজমিতে। কক্সবাজার শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে খুরুশকুল এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরে ২৫৩ একর জমির ওপর তাদের পুনর্বাসনে গড়ে উঠছে এ ‘বিশেষ আশ্রয়ণ’ প্রকল্প। পুরো এলাকাকে চারটি জোনে ভাগ করে ১৩৯টি পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার কথা। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য আশ্রয়ণের ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে একটি বড়

উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধু অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার মতো মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ছিলেন অঙ্গীকারবদ্ধ। এ মহোত্তম উদ্যোগ তাঁর

প্রতি জাতির বিনম্র শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর