বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করুন

জোঁক যেমন মানুষের অজান্তেই তার রক্ত চুষে নেয়, তেমন মানি লন্ডারিং চুষে নিচ্ছে দেশের অর্থনীতির রক্ত। দেশ থেকে লাগামহীনভাবে অর্থ পাচারের কারণে অর্থনীতির বিকাশ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারছে না। বাংলাদেশ থেকে যে বিপুলভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে এটি উঠে এসেছে সুইজারল্যান্ডের সুইস ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণা সংস্থা ব্যাসেল ইনস্টিটিউট অন গভর্ন্যান্সের জরিপ প্রতিবেদনে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানি লন্ডারিং নিয়ে কাজ করা এ সংস্থাটি প্রকাশিত জরিপ প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁঁকি বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে মানব পাচারের মতো ঘটনা বেড়েছে। মানব পাচার আর আমদানি-রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচার করা হচ্ছে। এর ফলে সুইস ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ কমছে না। যদিও পাশের অনেক দেশের ক্ষেত্রেই সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দ্রুত কমছে। অর্থ পাচার বা মানি লন্ডারিংকে বিশ্বসমাজ অত্যন্ত গুরুত্বের চোখে পর্যবেক্ষণ করছে। সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হয় মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের ১৪১টি দেশের মধ্যে মানি লন্ডারিং ঝুঁঁকির তালিকায় বর্তমানে ৩৮ নম্বরে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৫.৮৮। এর আগের জরিপে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫.৮০। এতে বাংলাদেশের মানি লন্ডারিং ঝুঁঁকি বাড়ছে বলে মনে করে সংস্থাটি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সরকারি কেনাকাটায় অনিয়ম-দুর্নীতি বেড়ে যাওয়া, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অনিয়ম, মানব পাচারের দায়ে এমপি পাপুলের কুয়েতে আটক হওয়ার বিষয়ও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। মানি লন্ডারিং শুধু অর্থনীতির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে না, দেশের সুনামও ক্ষুণ্ন করছে। এমপি পাপুলকান্ডের জন্য বিশ্বের বাজারে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি কিছুটা হলেও কঠিন হয়ে উঠেছে।

বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে মানি লন্ডারিং বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। গ্রহণ করতে হবে জিরো টলারেন্স নীতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর