শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীতেও বন্যা

ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণে নজর দিন

দীর্ঘ ২২ বছর রাজধানীতে ছোবল হেনেছে বন্যা। মেগা সিটির প্রধান তিনটি নদ-নদীর দুটির পানি বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। বুড়িগঙ্গার পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে বইলেও তুরাগ ও বালু নদের পানি শঙ্কা জাগানো উচ্চতায় বয়ে চলেছে। ফলে রাজধানীর নিম্নাঞ্চলে বন্যা থাবা বিস্তার করেছে। তুরাগ ও বালুর পানি আবর্জনাভরা নোংরা খালগুলোয় ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা সয়লাব করে দিয়েছে। রাজধানীর পূর্বাঞ্চলেও বন্যার পানি উঠেছে কোথাও কোথাও। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বুড়িগঙ্গার পানি ১০, তুরাগে ৩ ও বালু নদের পানি ৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। শেষোক্ত দুটি নদের পানি প্রবাহিত হচ্ছে অনেক ওপর দিয়ে। দেশের উত্তরাঞ্চলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বন্যা থাবা বিস্তার করেছে মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে। রাজধানীতে বন্যার থাবা জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে বুড়িগঙ্গার পানির চাপে রাস্তা ভেঙে তলিয়ে গেছে দেড় শতাধিক বাড়ি, ধসে গেছে একটি দালান। বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, তুরাগ ও বালু নদের পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকা মহানগরী ও সংলগ্ন এলাকাগুলোর নিচু এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। রাজধানীর সুরক্ষায় ১৯৯৮ সালের বন্যার পর ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বহুমুখী উদ্দেশ্যে। এটি নির্মিত হলে বাইপাসটি বন্যার পানি থেকে রাজধানীকে রক্ষার বাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। একই সঙ্গে সার্কুলার রোড ও রেলপথ হিসেবে ব্যবহারের সৃষ্টি হতো সুযোগ। টঙ্গী খাল থেকে শুরু করে ইস্টার্ন বাইপাসটি তুরাগ নদের পাশ দিয়ে তেরোমুখ ব্রিজ হয়ে বালু নদ ও পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে অতিক্রম করে বালু নদের পাশ দিয়ে মাদানি এভিনিউতে পৌঁছানোর কথা। গত ২২ বছরে এটির বাস্তবায়নে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা প্রধান বাধা হয়ে কাজ করেছে। নকশা প্রণয়ন ও বারবার ডিপিপি পরিবর্তন প্রকল্পটিকে হিমাগারে আবদ্ধ থাকতে বাধ্য করেছে। রাজধানীর সুরক্ষায় ইস্টার্ন বাইপাসের দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের শীর্ষ মহলের সুনজর প্রত্যাশা করছে ঢাকাবাসী। প্রকল্পটি অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসতে হবে; রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে যার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর