রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

বিপদাপদে ধৈর্য রাখুন

মো. আবু তালহা তারীফ

বিপদাপদে ধৈর্য রাখুন

বিপদাপদ, সুখ-দুঃখ সব আল্লাহর দান। সবকিছুর মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। বিপদাপদ, দুঃখ-কষ্টে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দুঃখ-কষ্ট ও বিপদাপদের মাধ্যমে আল্লাহ পাপ মোচন করেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিনদের ওপর যে কোনো বিপদাপদ এমনকি একটি কাঁটাও যদি তার পায়ে বেঁধে এর জন্য পাপ মোচন হয়।’ মুসলিম।

সতর্ক হওয়ার জন্য জীবনে বিপদাপদ আসতে পারে। যখন আমরা কিছুটা ভুল পথে চলতে থাকি, তখন বিপদাপদের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের সতর্ক করে দেন। আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণেই দুনিয়ায় বিপর্যয়, বিপদাপদ দেখা যায়। যাতে মানুষ তাদের কৃতকর্মের কিছু শাস্তি ভোগ করে এবং যাতে তারা ফিরে আসে।’ সুরা রুম, আয়াত ৪১।

বিপদাপদ আসার অন্য একটি কারণ হতে পারে- কে প্রকৃত মুমিন এবং কে মুমিন নয়, এ পরীক্ষার জন্য। বিপদের সময় যে ইসলামের পথে অটল থাকতে পারে না সে মুনাফিক প্রকৃতির হয়ে যায়। এ রকম পরিস্থিতি যখন আসে তখন চোখের পাতায় ভেসে ওঠে কে প্রকৃত আর কে অপ্রকৃত। আমরা জানি এ রকম পরীক্ষা আল্লাহ আগেও নিয়েছেন। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘আমি তো এদের পূর্ববর্তীদেরও পরীক্ষা করেছি, আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করবেন কারা সত্যবাদী কারা মিথ্যাবাদী।’ সুরা আনকাবুত, আয়াত ২।

বিপদে পড়ে যখন বান্দা ধৈর্য ধারণ করবে এবং ধৈর্যের পরীক্ষায় সে পাস করবে তখন আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে যে যত প্রিয়, আল্লাহ তাকে বিভিন্নভাবে বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। রসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হয় নবীদের, এরপর যে যত বেশি আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত তার।’ তিরমিজি।

বিপদাপদ, দুঃখ-কষ্ট যখন যে অবস্থায়ই অসুক, সে অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করে বিপদের মোকাবিলা করতে হবে। দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুঃখ-কষ্টের সময় বলতেন, লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজজোয়ালিমিন।’ তিরমিজি।

সর্বোপরি, জীবন যে অবস্থায় চলুক না কেন, কোনোরকম বিচলিত না হয়ে সব সময় মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। রসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিনের বিষয়টা বড়ই অদ্ভুত! যখন তার সুখের কিছু হয় আর সে শোকর আদায় করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণকর, আবার যদি কোনো কষ্টের কিছু হয় আর সে সবর করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে, সবকিছুর মধ্যে তার কল্যাণ, অকল্যাণ বলতে মুসলমানের কিছুই নেই।’ মুসলিম।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর