সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাকালেও যানজট

বাসচালকদের সামাল দিন

করোনাকালেও যানজটের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না রাজধানী ঢাকা। বাসচালকদের খামখেয়ালিপনার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে মেগাসিটির পরিবহন ব্যবস্থা। যাত্রী নেওয়ার জন্য মাঝ রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করে যানজট সৃষ্টি বাসচালকদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ফলে যানবাহনের সংখ্যা আগের চেয়ে কমলেও যানজট বরং বেড়েছে। ট্রাফিক পুলিশের রহস্যজনক উদাসীনতায় যানজটের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে সাধারণ যাত্রী ও কর্মজীবীরা। সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড় সমান কথা। সময় ও নদীর স্রোত কারও জন্য বসে থাকে না। যানজটের কারণে যে সময় নষ্ট হচ্ছে অর্থনীতির বিচারে তা ভয়াবহ। এ সমস্যা উৎপাদনশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিদেশিরা বাংলাদেশের রাজধানীকে অস্বস্তির দৃষ্টিতে দেখেন যানজটের কারণে। যেসব কারণে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে যানজট তার অন্যতম। এ সমস্যা সমাধানে পূর্বসূরিদের মতো বর্তমান সরকারের উদ্যোগ থাকলেও ‘কাজির গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই’-এর মতো। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় রাজধানীর যানজট সমস্যা সমাধানে ফ্লাইওভার চালুসহ নানা প্রকল্প গ্রহণ করলেও প্রতিটি প্রকল্পেই রয়েছে সমন্বয়হীনতা। একই সঙ্গে বলা যায়, রাজধানীর যানজট নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেল চালু এবং ফ্লাইওভার নির্মাণই যথেষ্ট নয়, ট্রাফিক ক্ষেত্রে সুস্থ ব্যবস্থাপনাও নিশ্চিত করতে হবে। রাজধানীর ফুটপাথ ও রাজপথ অবৈধ দখলমুক্ত না হলে যানজটের থাবা ঠেকানো দুরূহ হয়ে পড়বে। যানজট নিরসনে যেখানে সেখানে পার্কিং বন্ধ ও চলাচলের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হতে হবে। বাসচালকদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধেও নিতে হবে উদ্যোগ। ফুটপাথ দখলমুক্ত হলে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় অনেকাংশে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। বিষয়টি সবার জানা থাকলেও ফুটপাথ অপদখলের সঙ্গে রাজনৈতিক টাউট, মাস্তান ও প্রশাসনের উৎকোচভোগীদের স্বার্থ থাকায় এ ব্যাপারে কেউ এগিয়ে আসছে না। যানজট জাতীয় অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদনের জন্য যে সময় ব্যয় হওয়ার কথা তা গিলে খাচ্ছে এ সমস্যা। যানজট সমস্যা সমাধানে আন্তরিক প্রয়াসই এখন সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর