মঙ্গলবার, ১৮ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারীরা কি দুষ্কৃতকারী?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারীরা কি দুষ্কৃতকারী?

বিপদে মোরে রক্ষা কোরো এ নহে মোর প্রার্থনা, বিপদে আমি না যেন করি ভয়- এই ছিল জীবনের ব্রত। কোনো দিন মৃত্যুকে ভয় করিনি, ভয় করেছি মিথ্যাকে, ভয় করেছি কাপুরুষতাকে। এখন তো বয়স হয়েছে যাওয়ার সময়। করোনায় বিধ্বস্ত দেশ, ঘুম থেকে উঠেই প্রিয়জনের মৃত্যুসংবাদে আকুল হই। ভয় করি না। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পারাই মানুষের সব থেকে বড় সার্থকতা। জন্মের পর একটি স্বাভাবিক সুন্দর মৃত্যু সবার কাম্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুরও সুন্দর স্বাভাবিক মৃত্যু আমরা কামনা করতাম। কিন্তু তাঁর পরিবারসহ এমন নির্মম ভয়াবহ মৃত্যু আমাদের কারও কাম্য ছিল না। তখন ছিল ২৮ বছর বয়স। সে বয়সে সবকিছু ভালো লাগত। সব থেকে বেশি ভালো লাগত ন্যায়, সত্য, স্বাধীনতা। ’৭১-এ বড় কেউ ছিলাম না। একটা জেলার প্রথম কাতারের ছাত্র সংগঠক ছিলাম। কিন্তু আমার বিবেক আমার ভালোবাসা আমার স্বাধীনতা আমাকে পালাতে দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধে শিরদাঁড়া সোজা করে বুক চিতিয়ে হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রথম প্রথম দিশাহারা মানুষ মুখ ফিরিয়ে থাকলেও মাস পার হতে না হতেই জনসাধারণ সহযোগিতার দুয়ার খুলে দিয়েছিল, দুই হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, রাজনৈতিক সহকর্মীরা প্রথম প্রথম পালিয়ে বেড়ালেও গ্রামগঞ্জের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ায় পরিচিত বন্ধুরাও আস্তে আস্তে যুক্ত হতে শুরু করেছিল। সিনিয়র নেতারা যদিও প্রথম প্রথম তাঁদের জ্যেষ্ঠতার অহমিকা নিয়ে কিছুটা আবোল-তাবোল করেছেন। কিন্তু এক-দুই মাস পেরোতেই কয়েকটা মারাত্মক সম্মুখযুদ্ধে সফলতা আসায় তাঁরা সমস্ত হৃদয় দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের সমর্থনের কোনো ঘাটতি ছিল না। গ্রুপিংয়ের কারণে যে দ্বন্দ্ব ছিল সে দ্বন্দ্বও কেটে গিয়েছিল। হুজুর মওলানা ভাসানীর নেতা-কর্মীরাও দ্বিধা ও ভয়ে ভয়ে কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগ দিলেও তাদের কোনো ভয় করতে হয়নি। ভিন্নমতের জন্য তাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। কারও সঙ্গে কোনো বঞ্চনার ব্যবহার না হওয়ায় দেশপ্রেমিক সবাই মনপ্রাণ উজাড় করে স্বাধীনতার জন্য লড়েছে। সবকিছু উজাড় করে একটা কিছু করলে যা হয় তা-ই হয়েছিল। বিজয় আমাদের ললাট চুমেছে, আমরা বিজয়ী হয়েছি। আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তখনো পাকিস্তানের কারাগারে। স্বাধীনতার পর ১৮ ডিসেম্বর পল্টনের জনসভায় কাদেরিয়া বাহিনীর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, ‘৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের পিতাকে ছেড়ে না দিলে পাকিস্তান আক্রমণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ছিনিয়ে আনা হবে। বঙ্গবন্ধু একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রধান। তাঁকে অন্য দেশের আটকে রাখার অধিকার নেই। বিশ্ববাসী এবং সরকারসমূহের কাছে আমাদের অনুরোধ- আমাদের পিতাকে সসম্মানে ফিরিয়ে দিন।’ সে জনসভায় বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী এমপি, বাছেত সিদ্দিকী এমপি, হুমায়ুন খালিদ এমএনএ, হাতেম আলী তালুকদার এমএনএ উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তৃতা করেছিলেন। আরও ছিলেন বেসামরিক প্রধান আনোয়ারুল আলম শহীদ, ব্রিগেডিয়ার ফজলুর রহমান, জাহাজমারা কমান্ডার মেজর হাবিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশে পল্টন ময়দানের প্রথম জনসভায় জাতির পিতার ছেলে শেখ জামালকেও আমরা নিয়ে গিয়েছিলাম।

বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরলে আমাদের সব অস্ত্র তাঁর পায়ের কাছে বিছিয়ে দিয়েছিলাম। পিতার নেতৃত্বে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম আবার পিতার কাছেই আমাদের ১ লাখ ৪ হাজার অস্ত্র জমা রেখেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি পাকিস্তানি কর্মচারীদের কথা শুনব না, বিশ্বাস করব না। মুক্তিযোদ্ধারা যা বলবে তা বিশ্বাস করব। তাদের কথামত কাজ হবে। ঘুষখোর কর্মচারীদের বলব, ণড়ঁৎ ংবৎারপবং ধৎব হড় ষড়হমবৎ ৎবয়ঁরৎবফ. যারা ছাত্র লেখাপড়া করতে চাও তারা লেখাপড়া করবে, সরকার সাহায্য করবে। যারা কৃষক, ব্যবসায়ী তাদের সাহায্য করব। বীরকে সম্মান না করলে কোনো জাতিতে বীর জন্মায় না। কাদেরকে আমি মায়ের পেট থেকে পড়ার সময় থেকে চিনি। কাদের চার দুষ্কৃতকারীকে পল্টন ময়দানে গুলি করে শাস্তি দিয়েছে। যারা লুটতরাজ করে, যারা মা-বোনের সম্মান নষ্ট করে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তাদের আরও এক হাজার জনকে যদি গুলি করে শাস্তি দিত তবু কাদের আমার ধন্যবাদ পেত, অভিনন্দন জানাতাম। স্বাধীন বাংলাদেশ কারও লুটপাটের রাজত্ব হবে না, স্বাধীন বাংলাদেশ হবে সাধারণ মানুষের।’ সে অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক মানুষ হিসেবে একমাত্র তোফায়েল আহমেদ ছিলেন। ছিলেন শেখ শহীদ, বঙ্গবন্ধুর ছেলে জামাল ও রাসেল। ভয়ে আর কেউ যায়নি। আমরা নাকি বঙ্গবন্ধুকে আটক করে সব ক্ষমতা নিয়ে নেব।

ষড়যন্ত্র! ষড়যন্ত্র! আর ষড়যন্ত্র! স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সব সময় ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাকে নিয়ে আরও ১০ গুণ। অস্ত্র দিয়েই পড়েছিলাম নানা ষড়যন্ত্রে। বঙ্গবন্ধু সন্তানের মতো স্নেহ করতেন, বিশ্বাস করতেন তাই ষড়যন্ত্রকারীরা তেমন সুবিধা করতে পারেনি। ভালো দিন গড়িয়ে যায় বহতা নদীর মতো। ’৭২ থেকে ’৭৫ মনে হয় এই বুঝি চোখ বন্ধ করে আবার খুললাম। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা চারদিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় বঙ্গবন্ধু প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণে হাত দিয়েছিলেন। সৃষ্টি করেছিলেন জেলা গভর্নর পদ্ধতি। আমাকেও টাঙ্গাইল জেলা গভর্নরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গভবনে জেলা গভর্নরদের প্রশিক্ষণে প্রথম প্রথম আগ্রহী না হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ভীষণ ঝুঁকে পড়েছিলাম। বুঝেছিলাম, মানুষের জীবনে নিরন্তর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। আজ যে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করি এর কিছুই হতো না যদি না নিবিষ্ট মনে বঙ্গভবনে গভর্নর প্রশিক্ষণ নিতাম। আমার সারা জীবনের শিক্ষাদীক্ষার অর্ধেক বঙ্গভবনে গভর্নর প্রশিক্ষণ। সেদিন ছিল প্রশিক্ষণের শেষ দিন শুত্রুবার। মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীদের দফতরে গিয়ে দেখে আসা তাঁরা কীভাবে কাজ করেন। তার পরই শেষ, যার যার জেলায় চলে যাওয়া। কিন্তু ১৫ আগস্ট মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে, ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ শোনার পরপরই সেই নির্মম ভয়াবহ নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের খবর ভেসে আসে। বাবর রোডের বাড়ি থেকে গজনবি রোডে মুসলিম সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মোহাম্মদ মোদাব্বেরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। তারপর খিলজি রোড, সেখান থেকে জহুরী মহল্লা, ধানমন্ডি, তারপর জিগাতলা। সেখান থেকে ধানমন্ডির ১৯-এ ইঞ্জিনিয়ার আর এ গণি খানের বাড়ি। সেখান থেকে মায়ের আদেশে ঘর থেকে বাইরে। মা বলেছিলেন, ‘বজ্র! তুই আর ঘরে থাকিস না। ওরা তোকে পেলে মেরে ফেলবে। ঘর থেকে ধরে নেওয়া তোর জন্য আমি কাঁদতে পারব না। রাস্তায় বেরিয়ে পড়, প্রতিবাদ কর। তুই মারা গেলেও আমি বুক ভরে কাঁদতে পারব।’ বলেছিলেন, ‘খোদা কা ঘরমে দের হ্যায়, আন্ধের নেহি।’ সেই বেরিয়ে পড়েছিলাম। মনে হয় আজও ঘরে ফেরা হয়নি। মাঝে কয়েক হাজার লিফলেট ছেড়েছিলাম, ‘খুনিরা বঙ্গবন্ধুর তিন সন্তান কামাল জামাল রাসেলকে হত্যা করলেও তাঁকে নির্বংশ করতে পারেনি। আমি কাদের সিদ্দিকী বঙ্গপিতার চতুর্থ সন্তান। যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ পিতৃহত্যার বদলা আমরা নেবই নেব।’ সীমান্তে ৩০০-৪০০ মাইল জায়গাজুড়ে প্রতিরোধ গড়েছিলাম। ভারতের মহীয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন।

১৫ আগস্ট এলে বড় ক্ষত-বিক্ষত হই। ইদানীং কষ্টও হয় খুব। এখন তো আগস্ট এলেই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে ১ আগস্টই কান্নœাকাটি শুরু হয়। ১৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত আমাদের কোনো শোক ছিল না, বরং বেশুমার আনন্দ ছিল। বোঝাই কাকে! বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুদিনেও রাস্তাঘাটে, পানের দোকানে ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য লোক জড়ো করা হয়। ঘটনাগুলো বুকে বড় বাঁধে। কতবার বলেছি, কিন্তু চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনি। আজকাল কেমন যেন আরও নির্দয় হৃদয়হীন হয়ে পড়েছে সবাই। কোনো আবেগ নেই, অনুভূতি নেই, নেই কোনো ভালোবাসা। কিছু একটা করতে হয় তাই করে। তা আবার তারা করে যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করেনি, বরং দাঁত কেলিয়ে সমর্থন করেছে তারা বা তাদের সন্তান-সন্ততি, নাতি-পুতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বেশুমার নাচানাচি করে। পৌরুষ ছিল না, সাহস ছিল না প্রতিবাদ করেনি। কিন্তু পিতার হত্যায় যারা হাততালি দিয়েছে তারা বা তাদের সন্তানরা কেন দাঁত কেলিয়ে হাসবে এবং সেই হাসিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমার বোনের সায় থাকবে? বড় কষ্ট হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী চলছে করোনার কারণে অনেক অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তা না হোক, আওয়ামী লীগ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর শতজন্মবর্ষ পূর্তিতে অন্যদের সম্পৃক্ত করা গেছে বা করা হয়েছে? না হয়নি। তাই কষ্ট হয় আমরা বঙ্গবন্ধুর অপদার্থ সহকর্র্মীরা তাঁকে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুলে ধরতে তো পারলামই না, বরং তিনি যা ছিলেন তা থেকে অনেক নিচে নামিয়ে আনলাম। কবে যেন শুনেছিলাম, ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছবি হবে। বঙ্গবন্ধু হবেন নাকি আমাদের দেশের এক ছোকড়া। শুনে বুক ফেটে যায়। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করতে তাকে তো কম করে দেড়-দুই যুগ তাঁর মতো হতে চেষ্টা করতে হবে, চলনে বলনে ভাব-ভালোবাসায়। একটা মুজিবকোট গায়ে দিতে তার তো মুজিবের সামান্য কিছু ভাবধারা থাকতে হবে। গান্ধী সিনেমা হয়েছে। একেবারে শ্রেষ্ঠ হয়েছে বলতে পারব না। কিন্তু সম্মানজনক গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আমাদের দেশে আজ কত বছর বঙ্গবন্ধুর কন্যার সরকার, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটা গবেষণা হয়েছে, কটা আন্তর্জাতিক মানের লেখা হয়েছে? সবই তো চর্বিত চর্বণ, সবই দালালি। দেশ চলছে দুই ধারায়- একটা বঙ্গবন্ধুই সব, অন্যটা বঙ্গবন্ধু কিছুই না, সব জিয়াউর রহমান। এর বাইরেও যে সত্য বলে বাস্তব বলে একটা বিষয় আছে তার কোনো লেশমাত্র নেই।

দেশের কথা মানুষের কথা অনেকেই শুনতে চায়। কিন্তু তার সুযোগ কোথায়? সবই তো দলকানা। বঙ্গবন্ধু নিহত হলে শত্রুরা বলার চেষ্টা করেছে কেউ প্রতিবাদ করেনি, পিতার নামে ‘ইন্না লিল্লাহ’ পড়ার লোক ছিল না- এসব কি সত্যি? আমরা প্রতিবাদ প্রতিরোধ করে ১০৪ জন তরতাজা তরুণ প্রাণ দিয়েছি, হাজারের ওপর আহত হয়েছি তাহলে এসবই কি মিথ্যা! ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির দিক থেকে আর্টিলারির এক বা দুটি গোলা মোহাম্মদপুরে এসে পড়েছিল। তাতে ১৩-১৪ জন নিরীহ মানুষ মারা গিয়েছিল, আহত হয়েছিল শতাধিক। তাদের নিয়ে মিডিয়া এবার বেশ আলোচনা করেছে। কিন্তু প্রতিরোধযুদ্ধে বগুড়া যুবলীগের সভাপতি খালেকুজ্জামান খসরু প্রথম শহীদ হয়। তার আলোচনা তো এলো না। সীমান্তে আদিবাসীরা সিংহভাগ যেমনি প্রতিরোধযুদ্ধে শরিক হয়েছিল তেমনি তারা জীবন দিয়েছে শহীদ হয়েছে- তাদের নাম তো এলো না। আজ কয়েক বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার চলছে। যারা পালিয়ে আছে তাদের দেশে এনে বিচার কার্যকরের প্রচেষ্টা চলেছে। কিন্তু সেই দুঃসময়ে যখন বঙ্গবন্ধুর ‘ব’ বলার পরিবেশ ছিল না, অনেকের সাহস ছিল না তখন যারা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তাদের এখন পর্যন্ত কেন স্বীকৃতি হলো না, ভাবীকাল কি কাউকে জিজ্ঞাসা করবে না? খন্দকার মোশতাকের আমলে প্রতিরোধযোদ্ধারা ছিল দুষ্কৃতকারী, জিয়া-এরশাদ-খালেদা সব সময় তাদের ললাটে দুষ্কৃতকারীর তকমা ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের আমলেও তারা কি দুষ্কৃতকারী? খুনের জন্য তিরস্কৃত হলে সেই খুন বা হত্যার প্রতিবাদকারীরা অবশ্যই পুরস্কৃত হবেন- এটাই বিধান। এখনো বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ প্রতিরোধকারীরা সরকারি খাতায় কেন দুষ্কৃতকারী- কোনো দিন কি এর উত্তর দিতে হবে না? ইতিহাসে যে প্রশ্ন আসবে সেটা আর কাউকে স্পর্শ করুক আর না করুক আমার বোনকে অবশ্যই স্পর্শ করবে। ব্যাপারটা তো মুছে ফেলার নয়, ব্যাপারটা কড়কড়ে সত্য ইতিহাস। আর কটা ১৫ আগস্ট পাব জানি না। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ- ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিন, ইতিহাসের কাছে দায়মুক্ত হোন। পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে এই শোকের মাসে কামনা করি, তিনি যেন বাঙালি জাতির পিতাকে পরিবার-পরিজনসহ হেফাজত করেন এবং দেশকে, দেশের মানুষকে করোনার হাত থেকে মুক্তি দান করেন।

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর