রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

হিজরি সনের ফজিলত

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

হিজরি সনের ফজিলত

হিজরি সনের উদ্ভব ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর খিলাফতকালে। ওই সময় খলিফার কাছে একটি চুক্তিপত্র আনা হয়। সেখানে শাবান মাসের কথা উল্লেখ ছিল। তখন ওমর (রা.) বললেন, এটা কি গত শাবান না আগামী শাবান মাস? তিনি এ সংক্রান্ত বিভ্রান্তি নিরসনে তারিখ গণনার নির্দেশ দিলেন এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মদিনায় হিজরতকে কেন্দ্র করে হিজরি সন গণনার সূচনা করেন। এ সময় মহররমকে প্রথম মাস হিসেবে গণ্য করা হয়।

হিজরি সন চান্দ্র সন। শরিয়তের আহকামের ক্ষেত্রে চন্দ্র মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। চন্দ্র মাসের হিসাব মতেই রোজা, হজ ও জাকাত প্রভৃতি আদায় করতে হয়। তবে কোরআন মজিদ চন্দ্রকে যেমন, তেমনি সূর্যকেও সাল তারিখ ঠিক করার মানদন্ড রূপে অভিহিত করেছে। সুতরাং চন্দ্র ও সূর্য উভয়টির মাধ্যমেই সাল-তারিখ নির্দিষ্ট করা জায়েজ। তবে চন্দ্রের হিসাব আল্লাহর কাছে অধিকতর পছন্দনীয় হওয়ায় শরিয়তের বিধি-বিধানকে চন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাখা হয়েছে। এ জন্য চান্দ্র বছরের হিসাব সংরক্ষণ করা ফরজে কেফায়া। সব উম্মত এটা ভুলে গেলে সবাই গোনাহগার হবে।

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনার মাস বারোটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার কর না (সূরা তাওবা-৩৬)।

এ আয়াতের চারটি সম্মানিত মাসকে চিহ্নিত করতে গিয়ে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনটি মাস হলো জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং অপরটি হলো রজব (তাফসির ইবনে কাসির)। হিজরি সন অনেক কারণেই গুরুত্ব বহন করে।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, লোকেরা আপনাকে নবচন্দ্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, আপনি বলুন, তা হলো মানুষের এবং হজের জন্য সময় নির্ধারণকারী (সূরা বাকারা-১৮৯)। এ আয়াত থেকে স্পষ্ট আল্লাহতায়ালা বান্দাদের হিসাব-নিকাশের সুবিধার্থে চন্দ্রকে সৃষ্টি করেছেন। এ জন্য, চন্দ্র মাস তথা হিজরি সনের গুরত্ব অপরিসীম।

মহান আল্লাহ চন্দ্র মাস সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলেন-আমি রাত ও দিনকে করেছি দৃষ্টি নিদর্শন, রাতের নিদর্শনকে অপসারিত করেছি এবং দিনের নিদর্শনকে আলোকোজ্জ্বল করেছি যাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করতে সক্ষম হও এবং রাতে তোমরা বর্ষ-সংখ্যাও হিসাব করতে পার এবং আমি সবকিছু বিশদভাবে বর্ণনা করছি। এ আয়াত থেকে উপলব্ধি করা যায় যে, আল্লাহতায়ালা অনুগ্রহ স্বরূপ তাঁর বান্দাদের সাল গণনা ও অন্যান্য হিসাব-নিকাশের জন্য দিন-রাতকে সৃষ্টি করেছেন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর