বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

ইবাদতের মাস মহররম

মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন

ইবাদতের মাস মহররম

হিজরি সাল গণনা করা হয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতের ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ইসলামের বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগি যেমন রোজা, হজ, কোরবানি, শবেকদর, শবেবরাত, আশুরা ইত্যাদি হিজরি সনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ফলে এমন ব্যবহারের মাধ্যমে সঠিক সময়ে ইবাদত-বন্দেগি পালনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব হয়। এজন্য তাফসিরে মাআরেফুল কোরআনে হিজরি সন বা চান্দ্রমাস গণনাকে ফরজে কিফায়া গণ্য করা হয়েছে। যদি উম্মতের একজনও এর ব্যবহার না করে তাহলে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ গুনাহগার সাব্যস্ত হবে।

হিজরি সন গণনা ইসলামী সংস্কৃতির অনুসরণ। এজন্য চান্দ্রমাস হিসেবে হিজরি সন গণনা করা মুসলমানদের জন্য কর্তব্য। হিজরি সন ইসলামী ঐতিহ্যের বাস্তব নমুনা; যা নিজ ঐতিহ্যকে অনুসরণ, অনুকরণ করতে শেখায়।

১০ মহররমকে আশুরা বলা হয়। ইসলামে এ দিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এ দিনে ইসলামের অনেক ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আশুরার বিশেষ তাৎপর্য লাভ করেছে ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়ার লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর হাতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রিয় নাতি হজরত হোসাইন (রা.) ও তাঁর বিপুলসংখ্যক অনুসারীর শাহাদাত-বরণের ঘটনায়। তবে আগে থেকেই দিনটি অসামান্য মর্যাদার অধিকারী। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু ইহুদির পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন, যারা আশুরার দিনে রোজা রেখেছিল। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘এটা কীসের রোজা?’ উত্তরে তারা বলল, ‘এ দিন আল্লাহ হজরত মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ডুবে যাওয়া থেকে উদ্ধার করেছিলেন। (অন্য বর্ণনায় আছে ফিরাউনের নির্যাতন থেকে মুক্ত করেছিলেন) এবং ফিরাউনকে দলবলসহ নিমজ্জিত করেছিলেন। আর এ দিনেই হজরত নুহ (আ.)-এর কিশতি জুদি পর্বতে স্থির হয়েছিল। ফলে এ দিনে হজরত নুহ (আ.) ও হজরত মুসা (আ.) কৃতজ্ঞতাস্বরূপ রোজা রেখেছিলেন। তাই আমরাও এ দিন রোজা রাখি।’ তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘মুসা (আ.)-এর অনুসরণ এবং এ দিন রোজা রাখার ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার।’ এরপর তিনি সেদিন (আশুরার দিন) রোজা রাখেন এবং সাহাবিদেরও রোজা রাখতে আদেশ করেন। বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ। হজরত আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার দিনের রোজার অসিলায় আল্লাহ অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ তিরমিজি। ইবাদতের মাস মহররমে আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি ইবাদত করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর