মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চিকিৎসা বিড়ম্বনা

লাগাম টেনে ধরতে হবে

চিকিৎসা একটি মহৎ সেবার নাম। শত শত বছর ধরে এ পেশার কুশীলবরা সেবার আদর্শকে লালন করেছেন নিজেদের মন ও মননে। সে পেশা আজ কালের বিবর্তনে বাণিজ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে আমাদের দেশে। সভ্যতার সংকটে আমরা কোথায় হাবুডুবু খাচ্ছি চিকিৎসা নিয়ে নোংরা বাণিজ্য তারই প্রমাণ। করোনাকালে যখন মানুষ অস্তিত্বের জন্য লড়াই চালাচ্ছে, তখনো কিছু লোকের অসুস্থ বাণিজ্যিক মানসিকতা দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর কালিমা লেপন করে দিয়েছে। এমনিতেই দেশের স্বাস্থ্য খাতে যথেচ্ছতা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে চিকিৎসাসেবার নামে ঘাটে ঘাটে বাণিজ্য চলার বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট। সেবা নিতে গিয়ে মোটা অঙ্কের বিলের ফাঁদে পড়ছেন সাধারণ রোগীরা। কভিড-১৯ চিকিৎসায় এক পিপিই ব্যবহার করে দিনভর সেবা দিলেও প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে আলাদা মূল্য। টেস্টের গলা কাটা ফি রাখা হচ্ছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয়। চিকিৎসকের নির্ধারিত ভিজিট ফি না থাকায় যে যার মতো ফি নিচ্ছেন। মাসে অন্তত তিনবার বাড়ানো হচ্ছে টেলিমেডিসিন ফি। স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবেই চলছে দেশের চিকিৎসাসেবা। এ বিষয়ে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। খসড়া স্বাস্থ্যনীতিতে বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে। এ কারণে নানা ফাঁকফোকরে চিকিৎসার নামে একশ্রেণির মুনাফাখোর রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছে। বাজারে কৃত্রিম ওষুধের সংকট তৈরি করে যাচ্ছেতাই মূল্য নিচ্ছে তারা। এ নিয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত বিশেষ করে গণমানুষের চিকিৎসার অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে স্বাধিকার আন্দোলনে। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে চিকিৎসা খাতকে আলাদা মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তবে আমলাতন্ত্রের নোংরা কারসাজিতে চিকিৎসা খাত তার সেবার মহত্ত্ব হারিয়েছে। এটি দুর্নীতি আর লুটেরাদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ দুর্ভাগ্যের অবসানে সরকারকে কড়া হতে হবে। চিকিৎসা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে হতে হবে কঠোর। এর কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর