শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ইউএনওকে হত্যাচেষ্টা

দুর্বৃত্তায়নের অবসান কাম্য

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমকে হত্যাচেষ্টার ঘটনা শুধু উদ্বেগজনকই নয়, এর মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলার হালহকিকতও জনসমক্ষে দৃষ্টিকটুভাবে প্রকাশ হয়ে পড়েছে। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির প্রসার কী বিপর্যয় ঘটাতে পারে তারও প্রমাণ ইউএনওর হত্যাচেষ্টা। আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার পরিণতিতে যে মাঠ পর্যায়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার নিরাপত্তা বিঘিœত হয়েছে তাও সবার সামনে স্পষ্ট করেছে এ নিন্দনীয় ঘটনা। একজন ইউএনও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তা। তার জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায় সে প্রশ্নটি স্বাভাবিকভাবে এসে যায়। এ হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের বড়সড় রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। রাজনীতিতে দুর্বৃত্তদের ঠাঁই দিলে তা যে রাজনৈতিক সংগঠনের জন্য ভাবমূর্তির সংকট সৃষ্টি করে, ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সুপরিকল্পিত হত্যাচেষ্টার সঙ্গে দুই তথাকথিত যুবনেতার সংশ্লিষ্টতা সে বিষয়টি তুলে ধরেছে। আমাদের দেশের জাতীয় অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা। এটি শুধু জাতির অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে না, ক্ষেত্রবিশেষ আমলাদের নিজেদের জন্যও যে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে, ঘোড়াঘাটকান্ড তারই নজির। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে দুই বছর আগেই অনুশাসন দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তা কার্যকর হলে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ইউএনওকে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হত্যাচেষ্টার শিকার হতে হতো না। আশার কথা, এ ঘটনায় কর্তাব্যক্তিদের কানে দেরিতে হলেও পানি গেছে। তারা আগামী সপ্তাহ থেকেই ইউএনওদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস দিয়েছেন। দুর্বৃত্তদের হাতুড়ি ঘাতে গুরুতর আহত ইউএনও ওয়াহিদা খানম মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। তিনি কখনো সুস্থ হয়ে উঠবেন সে সম্ভাবনাও কম। আমরা হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি শুধু নয়, দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিরও চির-অবসান কামনা করছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর