সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ড, ইউরোপ মহাদেশের একটি প্রজাতান্ত্রিক দ্বীপরাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম রেইকিয়াভিক। দেশটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে গ্রিনল্যান্ড, নরওয়ে, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড  এবং ফারো দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের সদা সক্রিয় ভূ-সাংগঠনিক প্লেপগুলোর সীমারেখার ঠিক উপরে অবস্থিত একটি আগ্নেয় দ্বীপ। আইসল্যান্ডের উত্তর প্রান্ত সুমেরুবৃত্তকে স্পর্শ করেছে। ডিম্বাকার এ দ্বীপটি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৪৮৫ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ। পার্শ্ববর্তী গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকার অংশ ধরা হলেও আইসল্যান্ডকে ইউরোপ অন্তর্গত রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করা যায়। দেশটির জলবায়ু, ভূগোল ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ। ভূ-গঠনগত দিক থেকে আইসল্যান্ড অপেক্ষাকৃত নবীন। বিগত ৬০ মিলিয়ন বছর ধরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের অবশেষ থেকে দীপটি উৎপত্তি লাভ করে। এখনো দ্বীপটিতে বেশকটি আগ্নেয়গিরি সক্রিয় আছে। ভূমিকম্প সাধারণ ব্যাপার। ভূ-গর্ভস্থ উষ্ণ পানীয় প্রসবনগুলো দেশটির ভবনগুলোকে সারা বছর ধরে উষ্ণ রাখে এবং কৃষিকাজে সহায়তা করে। দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রসবনগুলো থেকে নির্গত জলীয়বাষ্পের কারণে সেখানে অবস্থিত আইসল্যান্ডের রাজধানীর নাম দেওয়া হয়েছে রেইকিয়াভিত্তিক অর্থাৎ ধোঁয়াটে উপসাগর। ভৌগোলিকভাবে উত্তর সুমেরুর কাছে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও উত্তরে আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণ উপসাগরীয় সমুদ্রস্রোতের কারণে এখানকার জলবায়ু তুলনামূলকভাবে মৃদু। ফলে আইসল্যান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত মানব বসতিগুলোর একটি। এটিকে তাই সুমেরু অঞ্চলীয় রাষ্ট্র হিসেবেও গণ্য করা হয়। আইসল্যান্ডের রুক্ষ পর্বতশ্রেণিগুলো হিমবাহে আবৃত। এদের মধ্যে ভাতা হিমবাহটি ইউরোপের বৃহত্তম। আইসল্যান্ডের সমুদ্র উপকূল প্রায় সারা বছর ধরে জাহাজ নোঙর করার জন্য উন্মুক্ত থাকে। কেবল শীতকালে মেরুদেশীয় অঞ্চল থেকে আগত ভাসমান বরফের কারণে দেশের উত্তর ও পূর্বের বন্দরগুলো বন্ধ রাখতে হয়। প্রায় ১ হাজার বছর আগে খ্রিস্টীয় ৯ম শতকে ভাইকিং অভিযানকারী আইসল্যান্ডে বসতি স্থাপন করে। আইসল্যান্ডবাসী তাদের ভাইকিং ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে। অনেকেই একেবারে শুরুর দিকের বসতি স্থাপকদের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক খুঁজে বের করতে পারে। এখানে বসবাসকারী জনগণ জাতিতে নর্স ও কেল্টীয়। শুরুর দিকে মূলত নরওয়েজীর নাবিক ও অভিযানকারীরা এখানে বসবাস করত এবং এখান থেকে পরবর্তীতে গ্রিনল্যান্ড ও উত্তর আমেরিকাতে অভিযান চালাত।

            আফতাব চৌধুরী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর