সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যু

লাল সবুজ পতাকায় থাকবে তার অস্তিত্ব

মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী চলে গেছেন না ফেরার দেশে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্তের মৃত্যু শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই ১২ দিনের মাথায় আরও একজন জাতীয় বীর চলে গেলেন জীবনের পরপারে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানের সময় একদল সেনা সদস্য আবু ওসমান চৌধুরীকে হত্যা করার জন্য তার গুলশানের বাড়িতে চড়াও হয়। তিনি বাড়িতে না থাকায় রক্ষা পেলেও প্রাণ হারান তার স্ত্রী নাজিয়া খানম। ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে জন্ম হয় আবু ওসমান চৌধুরীর। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান তিনি। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে যখন ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞ অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হয়, সেই খবর আবু ওসমান চৌধুরী পান কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসে বসে। পরদিন সকালে তিনি কুষ্টিয়া থেকে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং একদল সৈনিকসহ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। পরে তাকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলে এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে তিনি মন্ত্রিপরিষদকে গার্ড অব অনার দেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠনেও ভূমিকা রেখেছেন আবু ওসমান চৌধুরী। চাঁদপুরের জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের বীর আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া বিস্তৃত হয়েছে সারা দেশে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন। জীবনের পরপারে চলে গেলেও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী বেঁচে থাকবেন দেশবাসীর অন্তরে। দেশের লাল সবুজ পতাকায় অনুভূত হবে তার অস্তিত্ব।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর