সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সামাজিক অবক্ষয়

সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে

আমাদের আশপাশে যেসব অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটছে তা উদ্বেগজনক। সমাজবিজ্ঞানীদের ধারণা, মূল্যবোধের ক্রমাগত অবক্ষয় আমাদের খাদের কিনারে এনেছে। পরিবারে, সমাজে, শিক্ষাঙ্গনে ও রাজনীতিতে এ অবক্ষয় আমরা দেখে আসছি। অবক্ষয়ের ভয়াবহতা মৃত্যু বা অন্য কোনোভাবে প্রকাশ পায়। অবক্ষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অস্থিরতা। একদল তরুণ শিক্ষা পাচ্ছে না। শিক্ষা পাওয়া অন্য একদল তরুণ শিক্ষা শেষে কাজ পাচ্ছে না। তরুণদের একটি দল মাদকের পথে হাঁটছে। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আকাশ সংস্কৃতি। অনাচার, অবক্ষয়, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক-এসব সামাজিক ব্যাধিই আকাশ সংস্কৃতির অন্যতম উপজীব্য। এতে আসক্ত বস্তিবাসী, মধ্যবিত্ত, ধনী সবাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা নতুন প্রযুক্তিকে অস্বীকার করার কোনো যুক্তি নেই। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের সমাজের নারীদের বিরুদ্ধেই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে আমাদের পারিবারিক বন্ধন দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। পরিবারগুলোয় ভঙ্গুরতা বিরাজ করছে। তরুণরা সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। মানসিক সমস্যার সঙ্গে নৈতিক অবক্ষয়ও বাড়ছে। করোনাকালে আমাদের দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। মানুষ যখন চাপে থাকে তখন আবেগে আক্রান্ত হয়। এ আবেগের মধ্যে এক ধরনের অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা তৈরি হয়। এ অবস্থায় একজনের রাগ, ক্ষোভ ও বিরক্তি হতে পারে। এসব ঘটনায় তৎক্ষণাৎ মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েও অনেককে আত্মহত্যা করতে দেখা যায়। বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এক ধরনের সামাজিক অসহিষ্ণুতা তৈরি করছে। সামাজিক বৈষম্য কমিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজের চিত্র আমূল পাল্টে যাবে। মানুষের মধ্যে সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। অবক্ষয় রোধে রাষ্ট্রকে ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা মেনে চলতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর