মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

স্থানীয় সরকারে জনইচ্ছার প্রকাশ ঘটুক

দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল ঘোষণার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। মার্চ-এপ্রিলে কয়েক ধাপে হবে দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন। ইউনিয়ন পরিষদ তৃণমূল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষা জড়িত। ফলে এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মানুষের মনোজগতে যে সাড়া পড়ে তা অন্য কোনো নির্বাচনে অনুভূত হয় না। ঐতিহ্যগতভাবে দেশের স্থানীয় সরকার পর্যায়ের সব নির্বাচন মাত্র কয়েক বছর আগেও অনুষ্ঠিত হতো অরাজনৈতিকভাবে। প্রার্থীদের সিংহভাগের রাজনৈতিক পরিচয় থাকলেও দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া কিংবা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি ছিল না। এর ফলে অরাজনৈতিক যেসব ব্যক্তি সমাজসেবী হিসেবে এলাকায় ভূমিকা রাখতেন তারা নির্বাচনে আগ্রহ দেখাতেন। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের দলীয় পরিচয়ের বাইরে এলাকার মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ও ব্যক্তিগত গুণাবলির বিষয় প্রাধান্য পেত। ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এর পরিণতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তৃণমূল পর্যায়ে প্রার্থিতা নিয়ে কোন্দল ছড়িয়ে পড়ে। প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে শুরু হয় নিকৃষ্ট ধরনের মনোনয়ন বাণিজ্য; যা নির্বাচনব্যবস্থার ওপর অপপ্রভাবও রেখেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের অফিশিয়াল প্রার্থী ও বিদ্রোহীদের পেশিশক্তির প্রদর্শন শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে। এ কথা ঠিক, দুনিয়ার অনেক অগ্রসর গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিকভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দল অংশ নেয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করে। তবে গণতন্ত্রচর্চায় সীমাবদ্ধতায় ভোগা কোনো দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ কতটা গণতন্ত্রসম্মত হবে, তা বিগত স্থানীয় নির্বাচনগুলোর আলোকে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ওপর গণমানুষের আস্থা জিইয়ে রাখতে তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতীক ব্যবহারের ভালো-মন্দ নিয়ে যথাযথভাবে পর্যালোচনা করা হবে- এমনটি প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর