বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নদ-নদীর ড্রেজিং

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিন

বাংলাদেশ নদীনালার দেশ। বলা যায় বাংলাদেশের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ হলো নদীনালা। অথচ দেশের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের সদ্ব্যবহারে আমরা মোটেও যত্নবান নই। এ ব্যাপারে আমাদের উপেক্ষাকে অপরাধ বললেও অত্যুক্তি হবে না। একসময় দেশের যোগাযোগব্যবস্থার প্রধান মাধ্যম ছিল নদীপথ। নদীপথে যাত্রী ও পণ্য বহন খরচ সবচেয়ে কম এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু দেশের নদীপথ আজ অচল হওয়ার পথে। পলি পড়ে পড়ে একের পর এক নদী তার অস্তিত্ব হারাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে দেশের নদ-নদীর নাব্য সংকট দূর করতে ড্রেজিংয়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত। তিনি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি মডেল করে কাজ করতে হবে। ড্রেজিং লাগবেই। কিন্তু ড্রেজিং কীভাবে দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা দেখতে হবে। বর্ষাকালেও নাব্য সংকট প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বর্ষাকাল হলেও সংকট দেখা দিচ্ছে খুব বড় নদীতে। যে নদীতে এ সংকট সেটি অনেক চ্যানেলে প্রবাহিত হয় এবং তার কোনো কোনো চ্যানেলে প্রাকৃতিকভাবেই বেশি পলি জমে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার রুট কিছুদিন পরপর কিছু কিছু জায়গায় আটকে যায়। নদীশাসন যোগ না করলে ঘটনাটা ঘটতেই থাকবে। বাংলাদেশে গত শতকের ষাটের দশক থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত পলির পরিমাণ পর্যালোচনা করা হতো। কিন্তু এখন সদাশয় সরকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদাশয় কর্মকর্তারা খরচ না করায় এ সম্পর্কিত কোনো ডাটা আমাদের নেই। খ্যাতনামা এই পানি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ- ড্রেজিং করে পলি নদীর পাড়ে ফেলা যাবে না। চারপাশে উচু বাঁধ দিয়ে সেখানে ফেলতে হবে। দেশের নদ-নদীর নাব্য বজায় রাখার জন্য ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই। এদিক থেকে খ্যাতনামা এই পানি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক। দেশের নদ-নদীগুলোয় নিয়মিত ড্রেজিং করলে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়বে। বর্ষাকালে বন্যার আশঙ্কা কমবে। সবচেয়ে বড় কথা, নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সহজতর হবে। পাওয়া যাবে চাষাবাদের জন্য পানি সেচের সুবিধা। মাছ চাষের মাধ্যমেও লাভবান হবে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর