বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বেহাল সড়ক

নির্মাণে অনিয়ম বন্ধ করতে হবে

যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে সড়ক অবকাঠামোকে যে সরকার অধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছে, তা ফি বছরের বাজেটে এ খাতে উত্তরোত্তর বর্ধিত বরাদ্দ থেকে স্পষ্ট। গত ১০ বছরে নতুন সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ ও উন্নয়নে ৪৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হলো, বিপুল অর্থ ব্যয়ের পরও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা কাটেনি। বিশ্বব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট-২০১৯’ প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক অবকাঠামোর মানের ভিত্তিতে প্রণীত সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল ছাড়া অন্য সব দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে। সামগ্রিকভাবে অবকাঠামো বিবেচনায় ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সড়ক গবেষণাগারের প্রতিবেদনেও সড়কব্যবস্থার যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা সুখকর নয়। সারা দেশে ‘দুর্বল’ সড়কের দৈর্ঘ্যও প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার; ‘খারাপ’ তালিকাভুক্ত সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার। দেশের অধিকাংশ মহাসড়কের পাশাপাশি আন্তজেলা পর্যায়ের সড়কগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। খানাখন্দে ভরা সড়ক-মহাসড়কগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেই। ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। বাড়ছে দুর্ঘটনা। কোথাও কোথাও চলতে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভাড়াও বাড়ছে। সড়কগুলোর বেহাল অবস্থার মূল কারণ সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার। প্রতি বছর দুই ঈদের আগে ও বর্ষার মৌসুমে সড়ক সংস্কারের কাজ বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সময়মতো অর্থায়ন না হওয়ার অজুহাত দিয়ে থাকেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক সময় ঠিকাদাররা প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর জন্য সময় ক্ষেপণ করেন, আর এ কাজে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদের যোগসাজশ থাকে বলেও অভিযোগ আছে। প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে পরিবহন চাহিদা বাড়ছে, এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণভাবে সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন প্রয়োজন। সড়ক নির্মাণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতে হলে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতেই হবে। দুর্বল সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর