শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কর্মসংস্থানে বিসংবাদ

বেকারত্ব দূরীকরণের পদক্ষেপ নিন

করোনাভাইরাসে দুনিয়াজুড়ে চাকরির বাজার সংকুচিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও তার ব্যত্যয় হয়নি। পোশাকশিল্পের কারণে অর্থনীতির চাকা অনেকটা সচল হয়ে উঠলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবস্থা বেশ নাজুক। শুধু চাকরি নয়, কর্মসংস্থানের অন্য সব সেক্টরেও বিরাজ করছে অচলাবস্থা। নির্মাণশ্রমিকদের অন্তত ৫০ ভাগ এখনো বেকারত্বের ঘানি টানছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বড় অংশই বিপাকে। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ বিদেশে কর্মরত। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও তারা মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। গত দুই যুগে বিশ্ব অর্থনীতি বেশ কয়েকবার ভয়াবহ মন্দার সম্মুখীন হলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তার হোঁচট লাগেনি রেমিট্যান্স আয়ের রমরমা অবস্থার কারণে। কিন্তু করোনাভাইরাসের শরাঘাতে দুনিয়াজুড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হয়ে পড়ায় কয়েক লাখ প্রবাসী এখন বেকার। তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে ১ লাখের বেশি প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। এমনিতেই দেশের কর্মজীবীদের বড় অংশ বিপাকে রয়েছেন করোনার করাল গ্রাসের পর থেকে। ফলে দেশে ফেরা শ্রমিকরা যে ভালো নেই তা সহজেই অনুমেয়। করোনাকালে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতগুলো অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। সংবাদমাধ্যমে চলছে হাহাকার অবস্থা। বেসরকারি খাতে নিয়োগ প্রায় শূন্যের পর্যায়ে ঠেকেছে। সরকারি সংস্থা, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা সর্বত্র ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। কর্মী নিয়োগ বন্ধ করেছে একসময় রমরমা অবস্থায় থাকা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো। দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারের হার হু হু করে বাড়ছে। পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে যারা বের হচ্ছেন তাদের জন্য দিনমজুরের সমান আয়ের চাকরি পাওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনায় বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ করেছে। কর্মসংস্থানে যে কর্কট সময় চলছে তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে সামাজিক অস্থিরতা বেড়ে যেতে পারে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা যে দেশের অগ্রগতির জন্য বাধা সৃষ্টি করবে, তা সহজে অনুমেয়। এমন আশঙ্কা এড়াতে এখন থেকেই সক্রিয় হতে হবে। এ মুহূর্তে অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেয়েও কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। বাড়াতে হবে স্বকর্মসংস্থানের পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর